কচুয়া উপজেলার আয়তন ১৩১.৬২ বর্গ কিলোমিটার
নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার ঝিনাইদহ জেলায় পাওয়া যায়। তবে আমার মতে ঝিনাইদহের বিখ্যাত খাবার যা আমাদের নিজস্ব আইডেনটিটি দেয় সেই খাবার গুলো হলো ঝিনাইদহের নলিন গুড়ের পায়েস, জীড়ান খেজুর রসের ক্ষীর,খালিশপুরের চমচম, মাছের মাথা দিয়ে শুক্তো।
ঝিনাইদহ যশোর জেলার একটি মহকুমা ছিল। ঝিনাইদহ জেলাটি ১৮৬২ সালে মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৪ সালে এটি একটি পৃথক জেলা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলা ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে।
ঝিনাইদহ যশোর জেলার একটি মহকুমা ছিল। ঝিনাইদহ জেলাটি ১৮৬২ সালে মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৪ সালে এটি একটি পৃথক জেলা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলা ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে।
এই জেলার নামকরণ সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। কথিত আছে যে, ক্যালসিয়াম উৎপাদনের জন্য '‘নবগঙ্গা’' নদী এবং '‘দহা’' নদী থেকে ঝিনুক সংগ্রহের জন্য এই এলাকা বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। এই জেলার নাম ঝিনাইদহ “ঝিনুক”এবং “দাহ”শব্দদ্বয় থেকে নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হয়।
প্রাচীনকালে বর্তমান ঝিনাইদহের উত্তর পশ্চিম দিকে নবগঙ্গা নদীর ধারে ঝিনুক কুড়ানো শ্রমিকের বসতি গড়ে ওঠে বলে জনশ্রুতি আছে। সে সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা থেকে ব্যবসায়ীরা ঝিনুকের মুক্তা সংগ্রহের জন্যে এখানে ঝিনুক কিনতে আসতো। সে সময় ঝিনুক প্রাপ্তির এই স্থানটিকে ঝিনুকদহ বলা হতো। সে সময় ঝিনুক থেকে মুক্তা সংগ্রহের মাধ্যমে এবং ঝিনুক পুড়িয়ে চুন তৈরি করে তা বিক্রি করে মানুষ অর্থ উপার্জন করতো।অনেকের মতে ঝিনুককে আঞ্চলিক ভাষায় ঝিনেই, ঝিনাই এবং দহ অর্থ বড় জলাশয় ও ফার্সি ভাষায় দহ বলতে গ্রামকে বুঝানো হতো। সেই অর্থে ঝিনুকদহ বলতে ঝিনুকের জলাশয় অথবা ঝিনুকের গ্রাম বুঝাতো। আর এই ঝিনুক এবং দহ থেকেই ঝিনুকদহ বা ঝিনেইদহ, যা- রূপান্তরিত হয়ে আজকের ঝিনাইদহ নামকরণ হয়েছে।অন্য কিংবদন্তি থেকে জানাযায়, এক ইংরেজ সাহেব এই এলাকা দিয়ে নৌকাযোগে নবগঙ্গা নদী পর হচ্ছিলেন।
অনেক লোকজন তখন নদী থেকে ঝিনুক সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত ছিল। উপস্থিত লোকদের কাছে সাহেব তখন এলাকাটির নাম জানতে চান। লোকেরা তার কথা বুঝতে না পেরে ভেবে নেন যে নদী থেকে তারা কি জিনিস তুলছে তার নাম জানতে চাচ্ছেন। এই মনে করে লোকেরা সাহেবকে বলেন ঝিনুক বা ঝিনেই। এতে ইংরেজ সাহেব ধরে নেন জায়গাটির নাম ঝেনি। এই ঝেনি শব্দটি পরে ঝেনিদা হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ঝিনাইদহকে আঞ্চলিক ভাষায় এখনও ঝিনেদা বলা হয়। ঝেনিদা, ঝিনেদা আর ঝিনাইদহ যাই বলা হোক না কেন ঝিনাইদহ নামের উৎপত্তি যে ঝিনুক থেকে তা এ অঞ্চলের মানুষের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য।ঐতিহ্যবাহী ঝিনাইদহ গ্রন্থে ঝিনাইদহ সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘‘বারো আউলিয়ার আশীর্বাদপুষ্টঃ গাজী-কালু-চম্পাবতীর উপাখ্যানধন্য; কে.পি. বসু, গোলাম মোস্তফার স্মৃতিবিজড়িত; বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, বিপ্লবী বীর বাঘাযতীনের শৌর্যময়; খেজুর গুড়, কলা-পানের প্রাচুর্যমণ্ডিত; পাগলাকানাই, লালন শাহের জম্মস্থান, কপোতাক্ষ, বেগবতী, চিত্রা, নবগঙ্গার ঝিনুকদহ এক কথায় নাম তার ঝিনাইদহ।’’
ঝিনাইদহের নামকরণের ন্যায় এর অপর ৫টি উপজেলারও রয়েছে নাম করনের বৈচিত্রময় ইতিহাস। শৈলকুপাঃশৈলকুপার কুমার নদীতে একসময় নাকি প্রচুর পরিমাণে শৈলমাছ পাওয়া যেত এবং তা সাধারণ কুপিয়ে মারা হতো। এজন্যেই এর নাম হয় শৈলকুপা। আবার অন্যদের মতে এখানে শৈলগুল্প বেশি থাকার কারনে এ অঞ্চলকেব শৈলকুপা নামে অভিহিত করা হয়। শৈলকুপা বহু পূর্বে ফরিদপুর জেলার মধ্যে ছিল।মহেশপুরঃভৈরবের তীরে অবস্থিত মহেশপুর উপজেলার আদিনাম যোগীদহ। পরবর্তীতে ১১০৭ সালে হিন্দু দেবতা মহেশপুর ঠাকুরের মন্দির প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আদিনাম পরিবর্তিত হয়ে মহেশপুর হয়। কেউ কেউ বলেন রাজা মহেশ চন্দ্রের নামানুসারে এলাকার নাম মহেশপুর হয়। অন্য জনশ্রুতি হল ঐ অঞ্চলের রাজত্ব এক জেলে রাজার হস্তগত হলে তার ছেলে ‘‘মহেশ’’ এর নামানুষারে মহেশপুর নামকরণ হয়। মহেশপুর ভারতের বনগাঁও মহাকুমার একটি অন্যতম অংশ ছিল।
১৯৪৭ সালে মহেশপুর ঝিনাইদহ মহাকুমার অন্তর্গত হয়। মহেশপুরকে খাদ্যভাণ্ডার বা রত্নভাণ্ডার বলা হয়।কালীগঞ্জঃকালীগঞ্জ উপজেলার নামকরণের পিছনে জনশ্রুতি আছে তা হলো এই বাজারে বিখ্যাত কালিমন্দিরকে অবলম্বন করেই কালীগঞ্জ নাম করন হয়।কোটচাঁদপুরঃজনশ্রুতি আছে, জঙ্গলে ঘেরা এ অঞ্চলে চাঁদফকির নামের এক দরবেশ আস্তানা গড়েন। তার নামে এর নাম হয় চাঁদপুর। মোঘল আমলে ১৬১০ সালে একটি কোর্ট নির্মিত হয়। আর চাঁদপুর নামের আগে কোট শব্দটি বসিয়ে এর নাম হয় কোটচাঁদপুর। বৃটিশ আমলে এখানে কোর্ট ছিল এবং ১৮৬২ সাল পর্যন্ত এটি মহকুমা বাণিজ্য নগরী হিসেবে খ্যাত ছিল।হরিণাকুন্ডুঃলোকমুখে প্রচার আছে ‘‘অভয়কুন্ড নামে এক ইংরেজ কর্মচারীর অত্যাচারী পুত্র হরিচরণ কুণ্ডুর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয় হরিণাকুন্ডু ।