নামকরণঃ উপজেলার নাম কলাপাড়া হলেও খেপুপাড়া নামে সমানভাবে পরিচিত। খেপু ও কলাউ নামে রাখাইন দুই ভাই জঙ্গল কেটে এই অঞ্চল মানুষ বসবাসের উপযোগি করে তোলে। কথিত আছে উপজেলা শহরের মধ্য দিয়ে উত্তর দক্ষিণে প্রবাহিত একটি খালের দুই পাড়ে খেপু ও কলাউ বাস করত । পূর্ব পাড়ে কলাউ মগ ও পশ্চিম পাড়ে খেপু মগ। কলাউ মগের নামানুসারে পূর্ব পাড়ের বসতির নাম কলাপাড়া এবং খেপু মগের নামানুসারে পশ্চিম পাড়ের গ্রামের নাম হয় খেপুপাড়া।
খেপু ও কলাউ রাঙ্গাবালী থেকে এখানে এসেছে বলে জানা যায়। কলাউ ছিলেন বড় ভাই আর খেপু ছিলেন ছোট ভাই। দুই জন দুই পাড়ার মাতুব্বর ছিলেন। কলাউ মাতবর প্রায় ৮০ বৎসর বেঁচে ছিলেন। তাঁদের ঘর-বাড়ি ও সমাধি আন্ধারমানিক নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে।
দুই পাড়া বিভক্তকারী খালটি পুরাতন কাঠপট্টি স্লুইজ গেট থেকে শুরু করে কুমারপট্টি কালর্ভাট ও আখড়াবাড়ি কালভার্ট হয়ে চিংগড়িয়ার পাশ দিয়ে এখনো প্রবহমান। কালক্রমে উক্ত দুটি নাম একই শহরের স্থায়ী নামে রূপান্তরিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ৯নং সেক্টরের অধীন তৎকালীন পটুয়াখালী জেলা একটি সাব-সেক্টর। পটুয়াখালী-বরগুনার ১০টি থানা নিয়ে গঠিত এই পটুয়াখালী সাব-সেক্টর।
১৮৬৭ সালের ২৭ মার্চ কলিকাতা গেজেটে পটুয়াখালী মহকুমা সৃষ্টির ঘোষণা প্রকাশিত হয়। ১৮৭১ সালে পটুয়াখালী মহকুমায় রূপান্তরিত হয়
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ। নদী বিধৌত পটুয়াখালী জেলার খাল-বিল, পুকুর, নালা, নিম্নভূমি গুলো মৎস্য সম্পদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জেলার নদী মোহনাগুলো ইলিশ মাছের জন্য বিখ্যাত। পটুয়াখালী জেলার বনাঞ্চলের পরিমাণ খুবই কম।
পটুয়াখালী জেলার বিখ্যাত খাবার মহিষের দই, বাপ্পি এবং কুয়াকাটা জন্য বিখ্যাত। পটুয়াখালী জেলাটি বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক অঞ্চল, এটি আমাদের দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। আয়তনে এ জেলাটি প্রায় ৩২২০.১৫ বর্গ কিমি।
দীর্ঘ ৮ মাস পাক-হানাদারদের হাতে অবরুদ্ধ থাকার পর একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত হয় এই জেলা। এইদিনে একদিকে স্বজন হারানোর বিয়োগ ব্যাথার দীর্ঘশ্বাস, অন্যদিকে মুক্তির আনন্দে উদ্বেল, আর সৃষ্টি সুখের উল্লাস । হৃদয় উজাড় করে বরণ করে নেয় পটুয়াখালীবাসী হানাদার মুক্ত এই দিনটিকে।