কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার মানুষেরা অত্যন্ত শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে। তাদের বাংলা উচ্চারণ অত্যন্ত স্পষ্ট জড়তাহীন, শ্রুতিমধুর এবং সকলের নিকট বোধগম্য। তবে সাধারন মানুষ বিভিন্ন স্থানে স্বতন্ত্র টানে বাংলা উচ্চারন করে থাকে।
কুমারখালী উপজেলা অসংখ্য জ্ঞানী ও গুনী মানুষের স্মৃতিধন্য এক সাংস্কৃতিক জনপদ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাউল সম্রাট লালন শাহ্, সাংবাদিকতার পথিকৃত কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার, ওহাবী আন্দোলনের নেতা কাজী মিয়াজানসহ অসংখ্য জ্ঞানী মানুষের পদচারনায় মুখরিত ছিল এ জনপদ। তাই সংস্কৃতিতে সবসময় অগ্রগামী ছিল কুমারখালী উপজেলা। বাউল লালন শাহ্ এর লালনগীতি, কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদারের রচিত গান, কবিগুরুর রবীন্দ্র সংগীত আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তাছাড়া বিভিন্ন পার্বন ও উৎস উপলক্ষে নানা সংগীত গান, ভাবগান, পুথিপাঠ, কৃষকের মেঠোগান, যাত্রা, সার্কাস, পাঁচালী, আবগান, সর্বদা সুরের মূর্ছনা সৃষ্টি করে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, উপলক্ষে এখানে বাউলগান, জারীগান, পালাগান, আড়ং, মেলা, পুতুল নাচের আয়োজন করা হয়।
কুষ্টিয়া, যশোর, দৌলতপুর সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত খুলনা জেলা ও ফরিদপুরের কিছু অংশ ছিল 'সেক্টর নং ৮' এর অন্তর্ভুক্ত। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী ও আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এম এ মঞ্জুর। এই সেক্টরে ছিল ৭টি সাব-সেক্টর।
কুষ্টিয়া জেলা তিলের খাজা, কুলফি আইসক্রিম এর জন্য বিখ্যাত। এ জেলাটিকে আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয়। এ জেলার মানুষ শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে।
পাটকে স্থানীয় ভাষায় 'কোষ্টা' বা 'কুষ্টি' বলতো, যার থেকে কুষ্টিয়া নামটি এসেছে। কারো মতে ফারসি শব্দ 'কুশতহ' থেকে কুষ্টিয়ার নামকরণ হয়েছে যার অর্থ ছাই দ্বীপ। আবার সম্রাট শাহজাহানের সময় কুষ্টি বন্দরকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া শহরের উৎপত্তি বলেও একটি মত রয়েছে।
কুষ্টিয়া (মুজিবনগর) বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী। ১৮৬৯ সালে কুষ্টিয়ায় একটি পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। হ্যামিলটন'স গেজেট প্রথম কুষ্টিয়া শহরের উল্লেখ পাওয়া যায়। লালনের মাজার ছাড়াও এ জেলার শিলাইদহে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি ও মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা।