১৭৭৯সালে খাসিরা ভোলাগঞ্জের পান্ডুয়া গ্রামে ব্যবসায়ীদের উপর আক্রমণ করেছিল, যারা ইউরোপীয়দের কাছ থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল। অনেক বণিক সিলেটের কালেক্টর রবার্ট লিন্ডসে কে অনুরোধ করেছিলেন যাতে খাসি থেকে তাদের বাঁচাতে একটি ছোট ইটের দুর্গ তৈরি করে দেন
১৭৮৯সালে, সিলেটের কালেক্টর জন উইলস পান্ডুয়ায় অনেক সিপাহী স্থাপন করেছিলেন। খাসি অবশ্য তাদের আক্রমণ চালিয়ে যায়, থানাদার ও বহু সিপাইকে হত্যা করে। দুই ইউরোপীয় বণিক পালিয়ে গিয়ে ঘটনাটি উইলিসকে জানাতে সক্ষম হয়েছিল, যিনি এটি কলকাতায় সরকারের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন। এরপরে একটি বাহিনী সেখান থেকে পান্ডুয়া গ্রামে প্রেরণ করা হয়েছিল, যদিও এটি রক্তহীন পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। উইলস সরকারকে আরও বলেছিলেন যে খাসি সেনারা প্রতিটি আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, মেসেঞ্জারের শিরশ্ছেদ করবেন এবং মুঘল সাম্রাজ্যের সময়ে এমনকি তারা যেমন সিলেটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলেন, ততই উত্তর সিলেটের উপর তার সত্যই নিয়ন্ত্রণ ছিল। ১৭৯৫সালে খাসির আরেকটি অভিযান ঘটে এবং এর অনেক বছর পরে খাসীরা তাদের পাহাড়েই রয়ে গিয়েছিল এবং সমভূমিগুলিকে ঝামেলা করে না। ১৯৭৬সালে, ।কোম্পানিগন্জ থানাটি ধলাই নদীর তীরে বুরদেও গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি বর্তমান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত তবে এর মধ্যে রয়েছে ইসলামপুর ইউনিয়ন (ছাতক), জালালাবাদ ইউনিয়ন (সিলেট সদর) পাশাপাশি রুস্তমপুর ও তোয়াকুল ইউনিয়ন (গোয়াইনঘাট)। থানা তৈরির কারণ ছিল কারণ শহরে যাওয়ার কোনও প্রধান রাস্তা ছিল না এবং বর্ষাকালে নদীর একমাত্র প্রবেশ পথ ছিল। এই অঞ্চলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসায়িক খাতে প্রবল উপস্থিতি ছিল এবং তাই এর নামকরণ করা হয় কোম্পানীগঞ্জ।
সিলেট জেলা কমলালেবু, চাপাতা, সাতকড়ার আচার এবং সাত রঙের চা এর জন্য বিখ্যাত। সিলেট জেলাটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত।
মৌলভীবাজার এর অর্থনীতির প্রধান ভীত হলো চা শিল্প ও রাবার শিল্প । এ জেলায় প্রচুর পরিমানে চা ও রাবার উৎপাদিত হয় । এ ছাড়াও এ জেলার অর্থনীতিতে এই জেলার পর্যটন শিল্পও বিশেষ ভাবে উল্ল্যেখযোগ্য, তা ছাড়াও এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় শিল্প যা মৌলভীবাজার জেলার অর্থনীতিকে করছে সমৃদ্ধশালী ।
ইতিহাস গবেষক দেওয়ান নুরুল আনওয়ার জালালাবাদের কথা গ্রন্থে লিখেছেন খ্রিস্টিয় সপ্তম শতক পর্যন্ত সিলেট কামরুপ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।
সবচেয়ে প্রচলিত ধারণাটি হলো, শিলা মানে পাথর। আর পাথরের প্রাচুর্যের কারণেই এ এলাকার নাম সিলেট। এ ধারণার পালে আর একটু হাওয়া দিয়ে বলা হয়ে থাকে, সিলেট শব্দের অনুসর্গ সিল মানে শীল বা পাথর আর উপসর্গ হেট মানে হাট বা বাজার। প্রাচীনকাল থেকে এ জেলায় পাথর ও হাটের আধিক্য থাকায় শব্দ দু'টি মিলে সিলেট নামের উৎপত্তি।
সিলেট জেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২৪° ৪০’ থেকে ২৫° ১১’’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১° ৩’’ থেকে ৯২° ৩’’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সিলেট জেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় ও খাশিয়া-জৈন্তিয়া পাহাড়, পূ্র্বে ভারতের আসাম, দক্ষিণে মৌলভীবাজার জেলা ও পশ্চিমে সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলা অবস্থিত। এই জেলার আয়তন ৩,৪৯০.৪০ বর্গ কিমি। বাৎসরিক সর্বচ্চো তাপমাত্রা ৩৩.২° সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৬° সেলসিয়াস। বাৎসরিক বৃষ্টিপাত ৩৩৩৪ মিলিমিটার। প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারা। হাওড় সংখ্যা ৮২ টি। সংরক্ষিত বনাঞ্চল ২৩৬.৪২ বর্গ কিলোমিটার। ভারতের খাশিয়া-জয়ান্তা পাহারের কিছু অংশ এই জেলায় পরেছে। এছাড়াও কিছু ছোট পাহাড় ও টিলা রয়েছে এখানে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জৈন্তাপুর (৫৪ মাইল), সারি টিলা (৯২ মাইল), লালখান টিলা (১৩৫ মাইল), ঢাকা দক্ষিণ টিলাসমূহ (৭৭.৭ মাইল)।