১৮৬০ সালে ব্রিটিশ সরকার পাহাড়ি অধ্যুষিত অঞ্চলকে পার্বত্য অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। পাক-ভারত বিভক্ত হওয়ার পূর্বে এ অঞ্চলটি ত্রিপুরা রাজ্যশাসিত অঞ্চল ছিল। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা এই অঞ্চল দখল করে নিয়ে তাদের শাসন কায়েম করে। ঐ সময়ে খাগড়াছড়ি মহকুমা হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দুটি মহকুমা রামগড় ও খাগড়াছড়ি নিয়ে এই অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।ব্রিটিশ শাসনামলে খাগড়াছড়ি ১টি ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৬৮ সনে খাগড়াছড়িকে থানায় উন্নীত করা হয়। থানা হিসেবে দীর্ঘদিন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। থানা নির্বাহী অফিসার থানার যাবতীয় উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সরকারের বিকেন্দ্রীয়করণের ফলশ্রুতিতে ১৯৮২ সনে থানার পরিবর্তে উপজেলা ব্যবস্থা চালু হয়। তখনই এটি থানা থেকে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী খাগড়াছড়ি জেলার মোট জনসংখ্যা ৫,২৫,৬৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৭৭,৬১৪ জন এবং মহিলা ২,৪৮,৩৫০ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৯৫ জন।
খাগড়াছড়ির ধর্মবিশ্বাস-২০১১
ইসলাম (৪৫.৭১%)
বৌদ্ধ (৩৯.২৮%)
হিন্দু ধর্ম (১৪.২৪%)
খ্রিস্ট ধর্ম (০.৭৭%)
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৪৫.৭১% মুসলিম, ১৪.২৪% হিন্দু, ৩৯.২৮% বৌদ্ধ এবং ০.৭৭% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ জেলায় বাঙালী জনসাধারণের পাশাপাশি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা প্রভৃতি আদিবাসী ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২°৩৮´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯২°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে খাগড়াছড়ি জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার। এ জেলার পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ এবং উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ অবস্থিত।
খাগড়াছড়ি একটি নদীর নাম। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় পরবর্তী কালে তা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে উঠে, ফলে তখন থেকেই এটি খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।
১৮৬০ সালের ২০ জুন রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি হয়। জেলা সৃষ্টির পূর্বে এর নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হয়।