উপজেলার সবচেয়ে বড় উৎসব পোড়াদহ মেলা। উপজেলা সদর হতে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে গোলাবাড়ি বাজারের কাছাকাছি মহিষাবান গ্রামের পোড়াদহ নামক স্থানে ইছামতি নামক নদীর তীরে প্রতিবছর এই মেলা হয়ে আসছে। মেলা হয় প্রতিবছর বাংলা মাঘ মাসের শেষ দিনের কাছের বুধবার (পরের অথবা আগের)। কথিত আছে প্রায় চারশত বছর আগে পোড়াদহ নামক স্থানে বটবৃক্ষের নিচে কিছু সংখ্যাক সন্ন্যাসী আশ্রম তৈরি করে। তখন থেকে শুরু হয় সন্ন্যাসী পূজা। মুলত এটি হিন্দু ধর্মালম্বীদের উৎসব হলেও কালের বিবর্তনে উৎসবটি ধর্মের গন্ডি পেরিয়ে পরিনত হয়েছে সকল ধর্মের মানুষের মিলন মেলায় এবং উপজেলার সবচেয়ে বড় উৎসবে। মেলা মূলত একদিনের হলেও সপ্তাহ ব্যাপী উৎসব চলতে থাকে। মেলা উপলক্ষে দুরদুরান্তের আত্মীয় স্বজন এসে প্রতিটি বাড়ি ভরে যায়। যেসব মেয়েদের বিয়ে হয়েছে তারা জামাই, ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাপের বাড়ি বেড়াতে আসে। তাই অনেকের কাছে এই মেলা জামাই মেলা নামেও পরিচিত। মূল মেলা হয় বুধবার। মেলার প্রধান আকর্ষণ বড় বড় মাছ। শুধু মাছ কেনার জন্য হলেও দুর দুরান্তের জেলার মানুষ সেদিন মেলায় আসে। মাছের পাশাপাশি থাকে বড় বড় মিষ্টি। এছাড়া থাকে গৃহস্থালির দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্য। পাওয়া যায় কাঠের এবং স্টিলের আসবাবপত্র। আছে ছোট এবং বড়দের বিনোদনের হরেক রকম ব্যবস্থা। আছে ছোটদের খেলনা বড়দের কসমেটিক সামগ্রী। বিনোদনের ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে মটরসাইকেল খেলা, নাগড় দোলা এবং যাত্রা পালা। মূল মেলার পরদিন বৃহস্পতিবার একই স্থানে এবং আশেপাশের গ্রামে গ্রামে চলে বউ মেলা। বাড়ির যেসব মেয়েরা কাজের চাপে আগেরদিন মেলায় যেতে পারেনা তাদের জন্যই এই বিশেষ ব্যবস্থা। এই মেলায় শুধু মেয়েরাই যেতে পারে।
৮৮.৫০ ডিগ্রী পূর্ব থেকে ৮৮.৯৫ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এবং ২৪.৩২ ডিগ্রী উত্তর থেকে ২৫.০৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশে বগুড়া সদর উপজেলা অবস্থিত।
বগুড়ার উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট, উত্তর পশ্চিমে জয়পুরহাটের অংশবিশেষ,পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে নওগাঁ, দক্ষিণে নাটোর ও সিরাজগঞ্জের অংশবিশেষ এবং দক্ষিণ পূর্বে সিরাজগঞ্জের অবশিষ্ট অংশ বিদ্যমান। বগুড়ার পূর্বে জামালপুর থাকলেও এর স্থলভাগ সংযুক্তভাবে অবস্থিত নয়।
বগুড়া ভৌগোলিকভাবে ভূমিকম্পের বিপজ্জনক বলয়ে অবস্থিত। তাছাড়া বগুড়া জেলা বরেন্দ্রভূমির অংশবিশেষ যা ধূসর ও লাল বর্ণের মাটির পরিচিতির জন্য উল্লেখ্য।
বগুড়া জেলার জনসংখ্যা মোট: ৩৭,৩৪,৩০০ জন
পুরুষ:৪৯.৬০%
মহিলা:৫০.৪০%|উত্তরবঙ্গের ১৬ টি জেলার মধ্য জনসংখ্যায় বৃহত্তম জেলা হচ্ছে বগুড়া। এবং সারা বাংলাদেশে ষষ্ঠ বৃহত্তম জেলা।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতকে বগুড়া মৌর্য শাসনাধীনে ছিল। মৌর্য এর পরে এ অঞ্চলে চলে আসে গুপ্তযুগ । এরপর শশাংক, হর্ষবর্ধন, যশোবর্ধন পাল, মদন ও সেনরাজ বংশ ।
সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবনের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন বগড়া ১,২৭৯ থেকে ১,২৮২ পর্যন্ত এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন। তার নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছিল বগড়া (English:Bogra)। ইংরেজি উচ্চারন 'বগড়া' হলেও বাংলায় কালের বিবতর্নে নামটি পরিবর্তিত হয়ে 'বগুড়া' শব্দে পরিচিতি পেয়েছে। ২ এপ্রিল ২০১৮ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে বগুড়ার ইংরেজি নাম Bogura করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বগুড়া জেলার সংসদীয় আসন :৭টি