চট্টগ্রাম জেলায় প্রাকৃতিক সম্পদ গুলো :
জেলার একমাত্র গ্যাস ফিল্ড সাঙ্গু ১৯৯৪ সালে আবিস্কৃত হয়। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কেয়ার্ন এনার্জির এই গ্যাস ফিল্ড নিয়ে চুক্তি সম্পাদিত হয়। ১৯৯৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে এ গ্যাস ফিল্ড থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়।
তামাক
১৯৬০ এর দশকে শংখ ও মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী এলাকায় তামাক চাষ শুরু হয়। বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানি (এখন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানী) রাঙ্গুনিয়াতে তামাক চাষের ব্যবস্থা করে এবং পরে লাভজনক হওয়ায় চাষীরা তা অব্যাহত রাখে।
লবণ
সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় লবণ চাষ লাভজনক। ইতিহাসে দেখা যায়, ১৭৯৫ সালে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে গড়ে বার্ষিক ১৫ লাখ টন লবণ উৎপন্ন হত।
চট্টগ্রাম জেলায় মাছ চাষের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। সমুদ্র এবং নদী-নালার প্রাচুর্য এর মূল কারণ। শহরের অদূরের হালদা নদীর উৎসমুখ থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত মিঠা পানির প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে বেশ উর্বর। বৃহত্তর চট্টগ্রামে দীঘি, বিল ও হাওড়ের সংখ্যা ৫৬৮, পুকুর ও ডোবার সংখ্যা ৯৫,৯৪১। মোট আয়তন ৮৫,৭০০ একর (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ১৯৮১), কর্ণফুলী নদীর মোহনায় প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার একর বিস্তৃত মাছ ধরার জায়গা হিসাবে চিহ্নিত। মৎস্য চাষ ও আহরণ রপ্তানির ক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ হাঙ্গর, স্কেট, রে, হেরিং, শার্কফিন এবং চিংড়ি উল্লেখ্য। চট্টগ্রামের মাছ চাষ ও আহরণের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল শুটকি (মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করা)। সোনাদিয়া, সন্দ্বীপ প্রভৃতি দ্বীপাঞ্চল থেকে শুটকি মাছ চট্টগ্রামের বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ আমলে শুটকি রেঙ্গুনে রপ্তানি করা হত।
চট্টগ্রাম জেলার মোট আয়তন ৫,২৮২.৯২ বর্গ কিলোমিটার (১,৩০৫,৪৩৮ একর)। আয়তনের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা।
চট্টগ্রাম জেলার মোট জনসংখ্যা ৯১,৬৩,৭৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫,৬৬,০৩৯ জন এবং মহিলা ৪৫,৯৭,০৭৬ জন এবং বাকি ৬৪৫ জন হিজড়া । জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৭০০ জন।(২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী)
চট্টগ্রামের ধর্মবিশ্বাস-২০২২
ইসলাম (৮৭.৪৭%)
হিন্দু ধর্ম (১০.৭০%)
বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্ম (১.৮৩%)
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৮৭.৪৭% মুসলিম, ১০.৭০% হিন্দু এবং ১.৮৩% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে ২১°৫৪´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৭´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ২৫৯ কিলোমিটার। এ জেলার দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা; পূর্বে বান্দরবান জেলা, রাঙ্গামাটি জেলা ও খাগড়াছড়ি জেলা; উত্তরে ফেনী জেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। এছাড়া দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপ চট্টগ্রামের অংশ।
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। তিন পার্বত্য জেলা এ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে পার্বত্য এলাকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ জেলা ভেঙ্গে কক্সবাজার জেলা গঠিত হয়।
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। তিন পার্বত্য জেলা এ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে পার্বত্য এলাকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন করা হয়।