চাঁদপুর সদর উপজেলায় নদ নদী: ০৩ টি পদ্মা,-মেঘনা ও ডাকাতিয়া।
পদ্মা বাংলাদেশেরপ্রধান নদী। হিমালয়ে উৎপন্ন গঙ্গানদীর প্রধান শাখা এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী এই পদ্মার উত্তর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশে নদীটির দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১০ কিলোমিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক পদ্মা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ৩২।
মেঘন নদী বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর, ভোলা এবং লক্ষ্মীপুর জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৫৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩৪০০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। মেঘনা চাঁদপুরের মোহনা থেকে শুরু করেই সবথেকে বেশী খরস্রোতা হয়েছে এবং মেঘনা ভোলার শুরু থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১০০কি:মি: প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মেঘনা আপার নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ১৭। মেঘনা বাংলাদেশের গভীরতম ও প্রশস্ততম নদী এবং অন্যতম বৃহৎ ও প্রধান নদী।
ডাকাতিয়া নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চাঁদপুর ও কুমিল্লা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪১ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬৭ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ডাকাতিয়া নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ০৭।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২৩°০০´ থেকে ২৩°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩২´ থেকে ৯১°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে চাঁদপুর জেলার অবস্থান। রাজধানীঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৯৬ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ২০৮ কিলোমিটার। এ জেলার দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর জেলা ও নোয়াখালী জেলা; পূর্বে কুমিল্লা জেলা, উত্তরে কুমিল্লা জেলা, মেঘনা নদী ও মুন্সীগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী, মুন্সীগঞ্জ জেলা, শরীয়তপুর জেলা ও বরিশাল জেলা অবস্থিত। পদ্মা ও মেঘনা নদী দুটি চাঁদপুর শহরের কাছে এসে মিলেছে।
২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী চাঁদপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ২৬,৩৫,৭৪৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২,২৮,৭৭৪ জন এবং মহিলা ১৪,০৫,৬৮২ জন। মোট পরিবার ৬,৩৫,৪৫৮টি।
চাঁদপুর জেলায় ধর্মবিশ্বাস-২০২২
ইসলাম (৯৪.৩৭%)
হিন্দু ধর্ম (৫.৫৫%)
অন্যান্য ধর্ম (০.০৮%)
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৯৪.৩৭% মুসলিম, ৫.৫৫% হিন্দু, ০.০১% বৌদ্ধ এবং ০.০২% খ্রিষ্টান ও ০.০৫% অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। এছাড়া কিছু সংখ্যক ত্রিপুরা উপজাতি জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে এ জেলায়।
বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদরায়ের দখলে ছিল। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ঐতিহাসিক জে এম সেনগুপ্তের মতে, চাঁদরায়ের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাঁদপুর।
অন্যমতে, চাঁদপুর শহরের (কোড়ালিয়া) পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর। কারো মতে, শাহ আহমেদ চাঁদ নামে একজন প্রশাসক দিল্লী থেকে পঞ্চদশ শতকে এখানে এসে একটি নদী বন্দর স্থাপন করেছিলেন। তার নামানুসারে নাম হয়েছে চাঁদপুর।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চাঁদপুর ২নং সেক্টরের অধীনে ছিল। ১৯৭১ সালের ১২ মে পাকবাহিনী হাজীগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ৫০ জন লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এ গণহত্যার পর মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালালে পাকবাহিনীর ১৭ জন সৈন্য নিহত এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শাহরাস্তি উপজেলার নাওড়া, সূচীপাড়া এবং উনকিলার পূর্বাংশে বেলপুরের কাছে মিত্র বাহিনীর সাথে পাকবাহিনীর সংঘর্ষে মিত্র বাহিনীর ১৩ জন সৈন্য এবং পাকবাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মতলব উত্তর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
চাঁদপুর জেলায় মোট ৮টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল: