নাচোলে তেভাগা আন্দোলন শুরু হয়। পদ্মা-মহানন্দা-পুনর্ভবার কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছিল মধ্যযুগের মুসলিম বাংলার প্রাণকেন্দ্র গৌড় নগরীর এক অগ্রসর জনপদ। ইতিহাসের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় এই জনপদ কখনোই বাংলার শাশ্বত প্রতিবাদমুখর ঐতিহ্যের পথ থেকে বিচ্যুত হয়নি ; বরং স্বদেশী ও ভিনদেশী সব রকমের শোষণ, নিপীড়ন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রামে এখানকার বরেন্দ্রভূমি চিরকাল স্বাধীনচেতা মানুষের বুকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশের বিরুদ্ধে সংঘটিত নীল বিদ্রোহ ও সাঁওতাল বিদ্রোহ, পাকিস্তান আমলে নাচোলের কৃষক বিদ্রোহ, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং এমনকি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী তাদের বিদ্রোহী ও অধিকারসচেতন সত্তার প্রমাণ দিয়েছেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রহনপুর তথা গোমস্তাপুর উপজেলার এই এলাকা ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৯৭১ এ পাকিস্তানি বাহিনী তাদের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামটি সাম্প্রতিকালের। জেলাবাসীর দাবির মুখে ২০০১ সালের ১লা আগস্ট সরকারিভাবে নবাবগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রাখা হয়। পূর্বে এই এলাকা 'নবাবগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল।
কালাই রুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় খাবার৷ এটি পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবারও বটে। এক সময় কালাই এর সহজলভ্যতার কারণে এই অঞ্চলে এই রুটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। এই এলাকার প্রত্যেক মেয়েই জানে জানে কীভাবে এই রুটি বানাতে হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত, কারণ গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অর্থনীতির প্রধান উৎস।
রাজধানী ঢাকা থেকে ৩২০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং রাজশাহী থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ অবস্থিত।