চুয়াডাঙ্গার ব্যবসা বাণিজ্য বলতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের আড়ৎদারিকেই বোঝায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা পানের জন্য সারাদেশে পরিচিত। এ জেলায় উৎপাদিত পান প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় ও বিদেশে রপ্তানি করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলার খেজুরের গুড় সারাদেশে বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। এ জেলায় প্রচুর খেজুর গাছ জন্মে। এ অঞ্চলের খেজুর গাছের রস খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু। এর আহরিত রস দ্বারা উৎপাদিত গুড় সুদুর অতীত থেকে এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশে ও বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
ইদানিং চুয়াডাঙ্গা জেলায় পোলট্রি শিল্প বেশ বিস্তার লাভ করেছে। এদের মধ্যে রাফিদ পোলট্রি এন্ড হ্যাচারী লিঃ অন্যতম। যারউৎপাদিত পণ্য দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী হচ্ছে। এ ছাড়াও এজেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক পোলট্রি খামার গড়ে উঠেছে।
এ জেলার সীমান্ত দর্শনায় চেকপোস্ট থাকায় সেখানে বেশ কিছু ক্লিয়ারিং-ফরওয়াডিং ব্যবসার অফিসও গড়ে উঠেছে। ফলে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার প্রসার লাভ করেছে এবং অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। এবং বর্তমানে এ জেলায় প্রস্তাবিত আরেকটি স্থলবন্দর স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ভুট্টা, তামাক ও পানে, খেজুরের গুড় এর জন্য বিখ্যাত। এ জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ফুল এবং আম উৎপাদন করে থাকে। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশনটি চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন।
চুয়াডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার নথিপত্রে দেখা গেছে, ১৯৮৭ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা অনুয়ায়ী চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বমোট মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১১০০ জন। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৫ সালে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫০০। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালে তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সর্বশেষ নাম ওঠে প্রায় ১৮০০ জনের।
সমুদ্র থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
চুয়াডাঙ্গা: স্বাধীনতা যুদ্ধের সুতিকাগার বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী চুয়াডাঙ্গা। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে চুয়াডাঙ্গা শত্রুমুক্ত করেন বাংলার মুক্তিসেনারা।
১৮৬২ সালে ১৫ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন চালু হয়। চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন চালু হলে ১৮৬২ সালে মহকুমা সদর দপ্তর দামুড়হুদা থেকে চুয়াডাঙ্গায় স্থান্তরীত হয়। যার ফলে চুয়াডাঙ্গা তখন নদীয়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ মহকুমা এবং বড় ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।