ঝালকাঠীর ভৌগলিক অবস্থান ঝালকাঠীকে প্রাধান্য দিয়াছে। একদিকে বরিশাল থেকে খুলনা জেলার পথিমধ্যে, আবার অন্যদিকে বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার সীমারেখার প্রামেত্ম এ ঝালকাঠী অবস্থিত। যুগ যুগ ধরে ঝালকাঠী একটি নদী বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সামুদ্রিক বন্দর ,চট্টলা ও চালনার মাঝামাঝি স্থানে এর অবস্থান। প্রাচীন সুগন্ধা নদীর তীরবর্তী এলাকায় মহারাজগঞ্জ বা ঝালকাঠীর অবস্থান। এলাকাটি দ্বীপমালা। দ্বীপগুলো এখনও সব তলিয়ে যায়নি। পূর্বকালে ঐসব দ্বীপগুলো জঙ্গলাকীর্ণ ছিল। বসবাস করত সর্প,ব্যাঘ্র,কুমির। পরবর্তীতে ছিল জলদস্যুদের আসত্মানা। এলাকাটি নদীবহুল। ওইসব পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবেলা করে এখানকার অধিবাসীরা হয়ে উঠেছে অদম্য সাহসী। ওই সঙ্গে নদী ও খালগুলোর প্রমত্ততার সঙ্গে মিলেমিশে গেছে এখানকার জাতীয় চরিত্র, ব্যবহার ও রম্নচি।
১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে ঝালকাঠি জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে ঝালকাঠি শহরকে জেলা শহরের মর্যাদা দেওয়া হয়।
একাত্তরের ২৩ নভেম্বর ৯নং সেক্টরের মধ্যে এ জনপদ সবার প্রথম হানাদার মুক্ত হয়েছিলো।
নদী বন্দরের জন্য ঝালকাঠি সবসময় ইউরোপীয়দের আকর্ষণ করেছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডাচ ও ফরাসিরা এখানে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছিল। বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য ঝালকাঠিকে দ্বিতীয় কলকাতা বলা হত। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঝালকাঠি সদর উপজেলার রেজাউল করিম ২৪ সদস্য বিশিষ্ট মানিক বাহিনী গড়ে তোলেন।
ঝালকাঠির জনপ্রিয় খাবার: ঝালকাঠি প্রাকৃতিক ফল যেমন আম, কলা, জলপাই, কাঠাল, তাল, লিচু, নারিকেল, আমড়া, পেয়ারা।
শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২২.৬৪০৮৯৩° উত্তর ৯০.১৯৮৮০৩° পূর্ব। সমুদ্র সমতল থেকে শহরটির গড় উচ্চতা ১১ মিটার। ঝালকাঠী শহর ঢাকা থেকে ১৯৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং বরিশাল বিভাগীয় শহর থেকে ২০ কি.মি. পশ্চিমে সুগন্ধা নদীর তীরে অবস্থিত। সুগন্ধা নদী থেকে বাসন্ডা খাল নামে একটি শাখা নদী উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে শহরকে দু'ভাগে বিভক্ত করেছে। শহরের ভিতরে আরও ১২টি খাল প্রবহমান রয়েছে।