১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পলাশী বিপর্যয়ের ৮ বছর পর ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী সনদ লাভ করে। এবছরই সিলেট ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসে। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সিলেট ছিল ঢাকা বিভাগের অধীনে। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাকে ভাগ করে পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ সৃষ্টি করা হলে সিলেটকে চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৪৭ সালের ১৩ই আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বদিন পর্যন্ত সিলেট আসামের একটি জেলা হিসেবে গণ্য ছিল। অর্থাৎ এই সময়ে নবীগঞ্জ আসাম প্রদেশের একটি জেলা হিসেবে সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট ব্রিটিশের কবল থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম পাকিস্তান কায়েম হলে সিলেট তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের একটি জেলায় পরিণত হয়। তখন সিলেটকে পুনরায় চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা হলে নবীগঞ্জকে চট্টগ্রাম বিভাগে ন্যস্ত করা হয়। ১৯৮৪ সালে সাবেক সেনাশাসক (রাষ্ট্রপতি) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে মহকুমাগুলোকে জেলায় পরিণত করলে সিলেট জেলাকে ৪টি জেলায় বিভক্ত করা হয়। যথা- সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কর্তৃক উপরিউক্ত ৪টি জেলার সমন্নয়ে বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ বিভাগ হিসেবে সিলেট বিভাগ ঘোষণা করেন। ১৯৯৫ সালের ১লা আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সিলেট বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়।
রাজস্ব জেলা নবীগঞ্জ ও এর আওতাধীন পরগনা সমূহ:
জন উইলস এর আমলে ১০ টি রাজস্ব জেলার মধ্যে নবীগঞ্জ ছিল ১টি অন্যতম রাজস্ব জিলা এবং এর অধীনস্থ ছিল মোট ১৬ টি পরগনা। এগুলো হচ্ছে-
মৌলভীবাজার এর অর্থনীতির প্রধান ভীত হলো চা শিল্প ও রাবার শিল্প । এ জেলায় প্রচুর পরিমানে চা ও রাবার উৎপাদিত হয় । এ ছাড়াও এ জেলার অর্থনীতিতে এই জেলার পর্যটন শিল্পও বিশেষ ভাবে উল্ল্যেখযোগ্য, তা ছাড়াও এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় শিল্প যা মৌলভীবাজার জেলার অর্থনীতিকে করছে সমৃদ্ধশালী ।
হবিগঞ্জ জেলার আর দশটি সাধারণ মানুষ ভাত মাছ খেলে এখানকার একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী মূলত প্রধান খাবার হিসেবে "ছিকর" নামের একটি খাবার গ্রহণ করে থাকে। অবাক করার বিষয় হল এটি এটেল মাটি দ্বারা নির্মিত একটি খাবার। প্রথমে স্বচ্ছ মিহি এটেল মাটি রোদে শুকোতে হয়।
বাহুবল উপজেলা প্রাকৃতিক বৈচিত্রে ভরপুর উপজেলা। এই উপজেলায় একই সাথে পাহাড়ী টিলা সমতল ভহমি এবং হাওড় অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এই উপজেলায় ৭টি চা-বাগান উপজেলাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করে তোলেছে। তা ছাড়া এইখানে নির্মাণাধীন ৫ তারকা বিশিষ্ট দি প্যালেস আকর্ষনের বিষয় বসত্মত্মুতে পরিণত হয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম গ্যাস ফিল্ড বিবিয়ানা । এটি কে পি আই শ্রেণীর স্থাপনা যা ৪ নং দীঘলবাক ইউনিয়ন ও ৩ নং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জের সৈয়দপুর বাজার হতে মাত্র ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে পাকা সড়কে ধরে গেলেই বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড দেখতে পাওয়া যায় ।
১৯৪৭ সালের ১৩ই আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বদিন পর্যন্ত সিলেট আসামের একটি জেলা হিসেবে গণ্য ছিল। অর্থাৎ এই সময়ে নবীগঞ্জ আসাম প্রদেশের একটি জেলা হিসেবে সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল।