১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল নরসিংদী শহরে পাকবাহিনীর রকেট বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলে ৩ জন নিরীহ লোক নিহত হয় এবং শতাধিক দোকান ভস্মীভূত হয়। ২৯ এপ্রিল পাকবাহিনী শিবপুর উপজেলার ঘাসিদিয়া নামক স্থানে এক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৪ জুলাই বেলাবো উপজেলা সদরের নিকটবর্তী স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে আবুল বাসারসহ ৫ জন শহীদ হন। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে শিবপুর উপজেলার চলনদিয়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও এ উপজেলার পুটিয়া নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে একজন ক্যাপ্টেনসহ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নভেম্বর মাসের শেষের দিকে এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মনোহরদী উপজেলার মনোহরদী হাইস্কুলে পাকসেনা ক্যাম্পে মুক্তিবাহিনীর অতর্কিত হামলায় ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়াও আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে মনোহরদী উপজেলার শুকুন্দী ইউনিয়নের দশদোনা গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।
এই জেলা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। নরসিংদী তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। নরসিংদী জেলার কাপড় কিনে নিয়ে যায় পুরো বাংলাদেশ এর মানুষ এবং অন্যান্য দেশে রপ্তানি করে থাকে।
১৯৮৪ সালে নরসিংদী সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব এবং রায়পুরা এ ০৬ টি উপজেলা এবং নরসিংদী পৌরসভা নিয়ে নরসিংদীকে জেলা ঘোষণা করে সরকার।
নরসিংদী জেলা বাংলাদেশের মধ্যভাগের ঢাকা বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল।
নরসিংদীকে ৩ নম্বর সেক্টরের অধীনে নেয়া হলে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. নূরুজ্জামান। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাসে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৯৭৭ পরবর্তী নারায়ণগঞ্জ মহকুমা থেকে নরসিংদী অঞ্চলকে একক মহকুমায় উন্নিতকরণ করার সুবাদে নরসিংদী পৌর পরিষদকে (ক) শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত করে স্থানীয় সরকারের স্বায়ত্তশাসিত ৩৩ টি মহল্লার সমন্বয়ে ৯ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১০.৩২ বর্গ কিঃ মিঃ আয়তন জুরে নরসিংদী পৌরসভায় রুপান্তর হয়।