আবহমান কাল ধরে এই অঞ্চলের গ্রামে গঞ্জে কাবাদি, হা-ডুডু প্রভৃতি খেলা হয়ে আসছে। এ অঞ্চলের মানুষ খুবই খেলাধুলা প্রিয়। অবসর সময়ে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন খেলাধুলা করে থাকে। বর্তমান আধুনিক যুগে এ অঞ্চলে ফুটবল, ক্রিকেট খেলা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ অঞ্চলে অনেক খেলার মাঠ রয়েছে। এছাড়া ফসল কাটা হয়ে গেলে ফসলের মাঠেও ছেলেরা ফুটবল,ক্রিকেট প্রভৃতি খেলাধুলা করে থাকে।
এ অঞ্চলের মানুষেরা খুবই বিনোদন প্রিয়। আমাদের বিভিন্ন বাঙ্গালী উৎসব যেমন বৈশাখী উৎসব,বর্ষবরন,রবীন্দ জয়ন্তী,নজরুল জয়ন্তী প্রভৃতি অনেক জাকজমক ভাবে পালন করে থাকে। এ সব উৎসবের সময়ে গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন মেলা হয়ে থাকে। এর মধ্যে বৈশাখী মেলা অন্যতম। এ মেলাকে কেন্দ করে গ্রামের একটা নির্দিষ্ট থাকে দোকানীরা বিভিন্ন পড়সা নিয়ে বসে। গ্রামের নারী-পুরুষ,শিশু-কিশোর সবাই এসব দোকান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জেলাপী,বাতাসা,প্রভৃতি ক্রয় করে থাকে। বৈশাখী উৎসব এ অঞ্চল তথা বাঙ্গালীর এক অতিহ্যবাহী উৎসব।
১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে ঝালকাঠি জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে ঝালকাঠি শহরকে জেলা শহরের মর্যাদা দেওয়া হয়।
একাত্তরের ২৩ নভেম্বর ৯নং সেক্টরের মধ্যে এ জনপদ সবার প্রথম হানাদার মুক্ত হয়েছিলো।
নদী বন্দরের জন্য ঝালকাঠি সবসময় ইউরোপীয়দের আকর্ষণ করেছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডাচ ও ফরাসিরা এখানে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছিল। বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য ঝালকাঠিকে দ্বিতীয় কলকাতা বলা হত। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঝালকাঠি সদর উপজেলার রেজাউল করিম ২৪ সদস্য বিশিষ্ট মানিক বাহিনী গড়ে তোলেন।
ঝালকাঠির জনপ্রিয় খাবার: ঝালকাঠি প্রাকৃতিক ফল যেমন আম, কলা, জলপাই, কাঠাল, তাল, লিচু, নারিকেল, আমড়া, পেয়ারা।
শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২২.৬৪০৮৯৩° উত্তর ৯০.১৯৮৮০৩° পূর্ব। সমুদ্র সমতল থেকে শহরটির গড় উচ্চতা ১১ মিটার। ঝালকাঠী শহর ঢাকা থেকে ১৯৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং বরিশাল বিভাগীয় শহর থেকে ২০ কি.মি. পশ্চিমে সুগন্ধা নদীর তীরে অবস্থিত। সুগন্ধা নদী থেকে বাসন্ডা খাল নামে একটি শাখা নদী উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে শহরকে দু'ভাগে বিভক্ত করেছে। শহরের ভিতরে আরও ১২টি খাল প্রবহমান রয়েছে।