The Ballpen
নাটোর জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা - theballpen

নাটোর জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা

9th Dec 2022 | নাটোর জেলা |

নাটোর জেলায় চার ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে যথাঃ

Natore- Dhaka Highway

==সড়কপথ== রাজধানী ঢাকা সহ প্রত্যক বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরগুলোর সাথে নাটোর জেলার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। এই জেলার অধিনে ৪টি মহাসড়ক যথা-নাটোর-রাজশাহী মহাসড়ক,নাটোর-বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক,নাটোর-সিরাজগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়ক,নাটোর-পাবনা-কুষ্টিয়া-যশোর মহাসড়ক এবং ১টি আঞ্চলিক মহাসড়ক নাটোর-নওগাঁ মহাসড়ক রয়েছে এছাড়া ১৪ টি জেলা সড়ক সহ ছোট বড় অনেক রাস্তা রয়েছে এই জেলায়।

আব্দুলপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশন, লালপুর,নাটোর

==রেলপথ== নাটোর জেলায় প্রায় ৭৫ কিলোমিটার রেললাইন রয়েছে। সারা দেশের সাথে এই জেলার উন্নত রেল যোগাযোগ রয়েছে। এই জেলায় ১২টি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে যথা-.

★নাটোর রেলওয়ে স্টেশন

★ঈশ্বরদী বাইপাস রেলওয়ে স্টেশন

★আব্দুলপুর জংশন রেলওয়ে স্টেশন

★মাঝগ্রাম জংশন রেলওয়ে স্টেশন

★মাধনগর রেলওয়ে স্টেশন

★আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন

★নলডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন

★বাসুদেবপুর রেলওয়ে স্টেশন

★ইয়াছিনপুর রেলওয়ে স্টেশন

★মালঞ্চি রেলওয়ে স্টেশন

★বীরকুটশা রেলওয়ে স্টেশন

★লোকমানপুর রেলওয়ে স্টেশন।

পদ্মা নদী, লালপুর

==নদীপথ== সারা দেশের সাথে নাটোর জেলা সদরের নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হলেও নাটোর জেলার লালপুর, সিংড়া, গুরুদাসপুর উপজেলার উন্নত নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।

==বিমানপথ== নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর নামে একটি বিমানবন্দর রয়েছে। এছাড়াও নাটোর সদর উপজেলায় ১টি ও বাগাতিপাড়া উপজেলার কাদিরাবাদ সেনানিবাস ১টি হেলিপোর্ট রয়েছে।

 





Related

নাটোর জেলা কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

নাটোর জেলা ১৯৮৪ সালে একটি জেলা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।



Related

নাটোরের বিখ্যাত খাবার কী?

নাটোরের খাবারের কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে কাঁচাগোল্লা। কাঁচাগোল্লা নাটোর জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। দেশব্যাপী কাঁচাগোল্লা এর স্বাদের জন্য খুব বিখ্যাত । দুধ ও চিনি ব্যবহার করে কাঁচাগোল্লা তৈরি করা হয়।



Related

নাটোর জেলা কেন বিখ্যাত?

নাটোর জেলা কাঁচাগোল্লা(মিষ্টি জাতীয় খাবার) ও বনলতা সেন(জীবনানন্দের বিখ্যাত কবিতার(বনলতা সেন) চরিত্র নাটোরের বনলতা সেন) এর জন্য বিখ্যাত। নাটোর জেলার বিখ্যাত বা দর্শনীয় স্থান: শহীদ সাগর|



Related

নাটোর জেলা

নাটোর জেলা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত একটি জেলা। জেলার উত্তরে নওগাঁ জেলা ও বগুড়া জেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলা ও কুষ্টিয়া জেলা, পূর্বে পাবনা জেলা ও সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে রাজশাহী জেলা অবস্থিত। জেলাটি ১৯০৫.০৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তন।এই জেলাটি মূলত বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমের আটটি জেলার মধ্য একটি জেলা।আয়তনের দিক দিয়ে নাটোর বাংলাদেশের ৩৫ তম জেলা। নাটোর জেলা দূর্যোগপ্রবণ এলাকা না হলেও সিংড়া উপজেলা ও লালপুর উপজেলায় আত্রাই নদী এবং পদ্মা নদীতে মাঝে মাঝে বন্যা দেখা দেয়। সদর ও নাটোরের সকল উপজেলার আবহাওয়া একই হলেও লালপুরে গড় তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি। পুরোনো নিদর্শনের মধ্য এই জেলার এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। নাটোর শহর, নাটোর জেলার ও উত্তরবঙ্গের সদরদপ্তর। বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় বাসভবন উত্তরা গণভবন নাটোর জেলায় অবস্থিত। এছাড়া পুরাতন বৃহত্তর রাজশাহী জেলার সাবেক সদরদপ্তর (১৭৬৯-১৮২৫).



Related

নাটোর জেলার পটভূমি

নাটোর মুঘল শাসনামলের শেষ সময় থেকে বাংলার ক্ষমতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। বিশেষ করে নবাবী আমলে নাটোরের ব্যাপক ব্যাপ্তি ঘটে। বাংলার সুবেদার মুর্শিদ কুলী খানের (১৭০১-১৭২৭ শাসনকাল) প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বরেন্দ্রী ব্রাহ্মণ রঘুনন্দন তার ছোটভাই রামজীবনের নামে এতদ অঞ্চলে জমিদারী প্রতিষ্ঠা করেন। রাজা রামজীবন রায় নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। কথিত আছে লস্কর খাঁতার সৈন্য-সামন্তদের জন্য যে স্থান হতে রসদ সংগ্রহ করতেন, কালক্রমে তার নাম হয় লস্করপুর পরগনা। এই পরগনার একটি নিচু চলাভূমির নাম ছিল ছাইভাংগা বিল। ১৭১০ সনে রাজা রামজীবন রায় এই স্থানে মাটি ভরাট করে তার রাজধানী স্থাপন করেন। কালক্রমে মন্দির, প্রাসাদ, দীঘি, উদ্যান ও মনোরম অট্টালিকা দ্বারা সুসজ্জিত নাটোর রাজবাড়ী প্রস্তুত হয়। পরে আস্তে আস্তে পাশের এলাকায় ঊন্নয়নের ধারাবাহিকতায় একসময় নগরী পরিণত হয়। সুবেদার মুর্শিদ কুলী খানের সুপারিশে মুঘল সম্রাট আলমগীরের নিকট হতে রামজীবন ২২ খানা খেলাত এবং রাজা বাহাদুর উপাধি লাভ করেন। নাটোর রাজ্য উন্নতির চরম শিখরে পৌছে রাজা রামজীবনের দত্তক পুত্র রামকান্তের স্ত্রী রাণী ভবানীর রাজত্বকালে । ১৭৮২ সালে ক্যাপ্টেন রেনেল এর ম্যাপ অনুযায়ী রাণী ভবানীর জমিদারীর পরিমাণ ছিল ১২৯৯৯ বর্গমাইল । শাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্য সুবেদার মুর্শিদ কুলী খান বাংলাকে ১৩ টি চাকলায় বিভক্ত করেন। এর মধ্যে রাণী ভবানীর জমিদারী ছিল ৮ চাকলা বিস্তৃত। এই বিশাল জমিদারীর বাৎসরিক আয় ছিল দেড় কোটি টাকার অধিক। বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যশোর এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলাব্যাপী বিস্তৃত ছিল তার রাজত্ব। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলার পুখুরিয়া পরগণা এবং ঢাকা জেলার রাণীবাড়ী অঞ্চলটিও তার জমিদারীর অন্তর্গত ছিল। এ বিশাল জমিদারীর অধিশ্বরী হওয়ার জন্যই তাকে মহারাণী উপাধী দেয়া হয় এবং তাকে অর্ধ-বঙ্গেশ্বরী হিসাবে অভিহিত করা হতো।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] একে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ সামন্তরাজ এবং এক মহিয়ষী নারীর রাজ্যশাসন ও জনকল্যাণ ব্যবস্থা।

নাটোরের রাজারা এই বিশাল জমিদারী পরিচালনা করতো নিজস্ব প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় । নবাবী আমলে তাদের নিজস্ব দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিচারের ক্ষমতা ছিল। শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তাদের নিজস্ব পুলিশবাহিনী এবং জেলখানা ছিল। ১৮৭৩ সালে ইংরেজ সরকারের এক ঘোষণাবলে রাণী ভবানীর দত্তকপুত্র রামকৃষ্ণ এর হাত থেকে কোম্পানী পুলিশ ও জেলখানা নিজ হাতে তুলে নেয়। কোম্পানী নিজহাতে জেলখানার দায়িত্ব নিয়ে প্রতি জেলায় জেলখানা স্থাপন করে। ইংরেজদের কর্তৃক পরিচালিত প্রথম জেলখানা নাটোরে প্রতিষ্ঠিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

রাণী ভবানীর শাসনামল পর্যন্ত নাটোর শহরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে প্রবাহিত হতো স্রোতস্বিনী নারদ নদ । পরবর্তীকালে নদের গতিমুখ বন্ধ হয়ে গেলে সমগ্র শহর এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে নিপতিত হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বদ্ধজল এবং পয়ঃনিষ্কাশনের একমাত্র সংযোগস্থল ছিল নারদ নদ। সেই নদ অচল হয়ে পড়ায় শহরের পরিবেশ ক্রমাগত দূষিত হয়ে পড়ে। ইংরেজ শাসকরা সেজন্য জেলাসদর নাটোর হতে অন্যত্র স্থানান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করে। মি. প্রিংগল ১৮২২ সালে ২৩ শে এপ্রিল জেলাসদর হিসাবে পদ্মানদীর তীরবর্তী রামপুর-বোয়ালিয়ার নাম ঊল্লেখ করে প্রস্তাবনা পেশ করেন। ১৮২৫ সালে নাটোর থেকে জেলা সদর রামপুর-বোয়ালিয়াতে স্থানান্তরিত হয়। জেলা সদর স্থানান্তরের পর ইংরেজ সরকার মহকুমা প্রশাসনের পরিকাঠামো তৈরি করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী মহকুমা হিসাবে নাটোরের পদাবনতি ঘটে। তারপর দীর্ঘ ১৬৫ বছর অর্থাৎ ইংরেজ, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের চৌদ্দ বছরের প্রশাসনিক ইতিহাসে নাটোর মহকুমা সদর হিসাবে পরিচিত ছিল। ১৯৮৪ সালে বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ভেঙ্গে নাটোর পুনরায় জেলাসদরের মর্যাদা লাভ করে।

দিঘাপতিয়ার জমিদার বাড়ি (বর্তমানে উত্তরা গণভবন)

রাজা রামজীবন রায় ১৭৩০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি রাজা রামকান্ত রায় কে রাজা এবং দেওয়ান দয়ারাম রায়কে তার অভিভাবক নিযুক্ত করেন। রামকান্ত রাজা হলেও প্রকৃত পক্ষে সম্পূর্ণ রাজকার্যাদি পরিচালনা করতেন দয়ারাম রায়। তার দক্ষতার কারণে নাটোর রাজবংশের ঊত্তোরত্তর সমবৃদ্ধি ঘটে। ১৭৪৮ সালে রামকান্ত পরলোক গমন করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর রাণী ভবানীকে নবাব আলীবর্দী খাঁ বিস্তৃত জমিদারী পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। নাটোরের ইতিহাসে জনহিতৈষী রাণী ভবানী হিসেবে অভিহিত এবং আজও তার স্মৃতি অম্লান। বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলার সাথে রাণী ভবানীর আন্তরিক সুসম্পর্ক ছিল।  পলাশীর যুদ্ধে রাণী ভবানী নবাবের পক্ষ অবলম্বন করেন।

পরবর্তীতে রাণী ভবানীর নায়েব দয়ারামের উপরে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি দিঘাপতিয়া পরগনা তাকে উপহার দেন। দিঘাপতিয়ায় প্রতিষ্ঠিত বর্তমান উত্তরা গণভবনটি দয়ারামের পরবর্তী বংশধর রাজা প্রমদানাথের সময় গ্রিক স্থাপত্য কলার অনুসরনে রূপকথার রাজ প্রাসাদে উন্নীত হয়। কালক্রমে এই রাজপ্রাসাদটি প্রথমত গভর্নর হাউস, পরবর্তীতে বাংলাদেশ অভ্যূদয়ের পরে উত্তরা গণভবনে পরিণত হয়।