পটুয়াখালী জেলায় সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিদ্যমান। এই অঞ্চলে লোকগীতি বিশেষ করে জারী ও ভাটিয়ালীর জন্য বিখ্যাত। এই জেলায় নিম্নলিখিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিদ্যামান।
পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ৩১টি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। যেমন পটুয়াখালী থিয়েটার, সবুজ সংঘ, শহীদ স্মৃতি পাঠাগার, পটুয়া সাহিত্য পরিষদ, সুন্দরম, লিখন সাহিত্য পরিষদ, বিকিরণ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন, প্রতিভা শিল্পী গোষ্ঠী, লেখক সমন্বয় পরিষদ, মুক্তপ্রাঙ্গণ, লেখক আড্ডা, কলকাকলী, লোকসংগীত একাডেমী ইত্যাদি। এছাড়া জাতীয় কয়েকটি সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠনের শাখা পটুয়াখালীতে বিদ্যমান। যেমন খেলাঘর, উদিচী শিল্পীগোষ্ঠী, রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, নজরুল চর্চা কেন্দ্র, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ইত্যাদি। কলাপাড়া উপজেলায় ০৫ টি এবং দশমিনা উপজেলায় ০৭ টি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। ০৬ আগস্ট ২০১১ থেকে পটুয়াখালীর শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা, লালন পালন ও বিকাশে ‘দখিনের কবিয়াল’ সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
শিল্পকলা একাডেমী হচ্ছে এ জেলার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রাণকেন্দ্র। সংগীত, নাচ এবং চিত্র কর্মের ব্যাপক চর্চা ও প্রচলন রয়েছে। পটুয়াখালী বসবাসকারী করে বেশ কিছু উপজাতীয় নৃগোষ্ঠী যার মধ্যে মগ ও চাকমা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া রয়েছে কলাপাড়া উপজেলার রাখাইন পল্লী। এরা বিভিন্ন ধরনের পোশাক যেমন, তাতের কাপড়, কামিচ, শাড়ী, লুঙ্গী, গামছা ইত্যাদি তৈরি করে থাকে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ৯নং সেক্টরের অধীন তৎকালীন পটুয়াখালী জেলা একটি সাব-সেক্টর। পটুয়াখালী-বরগুনার ১০টি থানা নিয়ে গঠিত এই পটুয়াখালী সাব-সেক্টর।
১৮৬৭ সালের ২৭ মার্চ কলিকাতা গেজেটে পটুয়াখালী মহকুমা সৃষ্টির ঘোষণা প্রকাশিত হয়। ১৮৭১ সালে পটুয়াখালী মহকুমায় রূপান্তরিত হয়
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ। নদী বিধৌত পটুয়াখালী জেলার খাল-বিল, পুকুর, নালা, নিম্নভূমি গুলো মৎস্য সম্পদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জেলার নদী মোহনাগুলো ইলিশ মাছের জন্য বিখ্যাত। পটুয়াখালী জেলার বনাঞ্চলের পরিমাণ খুবই কম।
পটুয়াখালী জেলার বিখ্যাত খাবার মহিষের দই, বাপ্পি এবং কুয়াকাটা জন্য বিখ্যাত। পটুয়াখালী জেলাটি বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক অঞ্চল, এটি আমাদের দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। আয়তনে এ জেলাটি প্রায় ৩২২০.১৫ বর্গ কিমি।
দীর্ঘ ৮ মাস পাক-হানাদারদের হাতে অবরুদ্ধ থাকার পর একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত হয় এই জেলা। এইদিনে একদিকে স্বজন হারানোর বিয়োগ ব্যাথার দীর্ঘশ্বাস, অন্যদিকে মুক্তির আনন্দে উদ্বেল, আর সৃষ্টি সুখের উল্লাস । হৃদয় উজাড় করে বরণ করে নেয় পটুয়াখালীবাসী হানাদার মুক্ত এই দিনটিকে।