ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলি জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তনের ফলে বার বার প্রাকৃতিক ঝুঁকিতে পড়েছে। বরগুনা জেলার অন্তর্গত পাথরঘাটা উপজেলা বাংলাদেশের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল। প্রাকৃতিক বিপদ নিয়ে বেঁচে থাকা পাথরঘাটার মানুষের জন্য নিত্যদিনের সমস্যা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব জীবিকার উপরে বিভিন্ন ধরনের অপ্রত্যাশিত বিপদ ডেকে আনে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঝুঁকি যেমন- বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সমুদ্রের লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশ, অতিরিক্ত কুয়াশা, তাপমাত্রা পরিবর্তন, নদীর তীর ভাঙন,ভারী বৃষ্টিপাত, বর্ষাকাল দেরিতে শুরু হওয়া এবং জলাবদ্ধতা পাথরঘাটার মানুষের জীবিকার উপর প্রভাব ফেলে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফসলের ক্ষয়ক্ষতি, নৌকা ও জালের ক্ষতি, সুপেয় পানীয় জলের ঘাটতি, অর্থনৈতিক ক্ষতি, দারিদ্র্যতা বৃদ্ধি, মৎস্য, গবাদি পশু, উদ্ভিজ্জ উদ্যান (ফসলের মাঠ) সহ জীবন জীবিকার অধিকাংশ উপাদানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর জলোচ্ছ্বাসে এবং ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর টর্নেডো সিডরে পাথরঘাটা উপজেলায় ৪ শতাধিক প্রাণহানির ঘটনাসহ ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিলো। ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা ও মহাসেনে পাথরঘাটা উপজেলায় সব মিলিয়ে প্রায় ২১ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার নদীরক্ষা বাঁধ সম্পূর্ণ ও ১১৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার বাঁধ আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো।
বরগুনা জেলা নারিকেল ও সুপারির জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও বরগুনার বিখ্যাত খাবার -চুইয়া পিঠা, চ্যাবা পিঠা, মুইট্টা পিঠা, আল্লান, বিসকি, তালের মোরব্বা, শিরনি, নাড়িকেলের সুরুয়া, চালের রুটি, ইলিশ মাছ, মিষ্টি।
প্রেক্ষাপট মুক্তিযুদ্ধে বরগুনা ছিল নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের অধীন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পরে বরগুনার মুক্তিকামী সহস্রাধিক তরুণ বাঁশের লাঠি, গুটি কয়েক রাইফেল, বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করে। এরই মধ্যে পাকবাহিনী দুর্বল প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী জেলা দখল করে ফেলে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ০৬/০৫/২০১০ তারিখে আমতলী উপজেলা ভেঙ্গে তালতলীকে উপজেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
বরগুনা-৩ বাংলাদেশের একটি বিলুপ্ত সংসদীয় আসন। বাংলাদেশের বরগুনা জেলার আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে এ সংসদীয় আসন গঠিত হয়েছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী গেজেটে এই আসনটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এই আসনের সর্বশেষ সাংসদ ছিলেন শেখ হাসিনা।
বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের জেলা। এর দক্ষিণে পটুয়াখালী ও বঙ্গোপসাগর, উত্তরে ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী; পূর্বে পটুয়াখালী এবং পশ্চিমে পিরোজপুর ও বাগেরহাট।
জেলা সদরে বরগুনা শহর। একটি পৌরসভা। ৯ ওয়ার্ড ও ১৮ মহল্লা।