শিক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী পাথরঘাটা উপজেলায় শিক্ষার হার ৬৫%। যার মধ্যে পুরুষের শিক্ষার হার ৬৮% এবং মহিলাদের ৬২%। ১৯৯৫ সালে পাথরঘাটার কলেজ রোডে প্রতিষ্ঠিত তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমী বরগুনা জেলার শ্রেষ্ঠ এবং বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অন্যতম সেরা বিদ্যালয়। পাথরঘাটা উপজেলায় ৯ টি কলেজ, ৪১ টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩ টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ১২০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৮ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২০ টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও ২ টি কামিল মাদ্রাসা, ৪ টি ফাজিল, ৭ টি আলিম ও ১৬ টি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। পাথরঘাটা উপজেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে রয়েছে তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমী, পাথরঘাটা কে.এম. উচ্চ বিদ্যালয়, পাথরঘাটা আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি হাজী জালাল উদ্দিন মহিলা ডিগ্রী কলেজ, পাথরঘাটা কলেজ, সৈয়দ ফজলুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও বাদুরতলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা।
পাথরঘাটা উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের অন্য সব শহরের মতই। সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এর অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধানত পাঁচটি ধাপ রয়েছে: প্রাথমিক (১ থেকে ৫), নিম্ন মাধ্যমিক (৬ থেকে ৮), মাধ্যমিক (৯ থেকে ১০), উচ্চ মাধ্যমিক (১১ থেকে ১২) এবং উচ্চ শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা সাধারণত ৫ বছর মেয়াদী হয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়, ৩ বছর মেয়াদী নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), ২ বছর মেয়াদী মাধ্যমিক শিক্ষা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), ২ বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়।
মূলত বাংলা ভাষায় পাঠদান করা হয় তবে ইংরেজি ব্যাপকভাবে পাঠদান ও ব্যবহৃত হয়। অনেক মুসলমান পরিবার তাদের সন্তানদের বিশেষায়িত ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন মাদ্রাসাতে প্রেরণ করেন। মাদ্রাসাগুলোতেও প্রায় একই ধরনের ধাপ উত্তীর্ণ হতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোন শিক্ষার্থী সাধারণত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। পাথরঘাটায় উচ্চ মাধ্যমিকের পর উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকারি হাজী জালাল উদ্দিন মহিলা ডিগ্রী কলেজ, পাথরঘাটা কলেজ ও সৈয়দ ফজলুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ রয়েছে যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করে।
প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ তম ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামানের জন্ম পাথরঘাটার কালিপুর গ্রামে। এছাড়াও পাথরঘাটার অনেক কৃতি সন্তান রয়েছেন যারা সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত রছেছেন।
বরগুনা জেলা নারিকেল ও সুপারির জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও বরগুনার বিখ্যাত খাবার -চুইয়া পিঠা, চ্যাবা পিঠা, মুইট্টা পিঠা, আল্লান, বিসকি, তালের মোরব্বা, শিরনি, নাড়িকেলের সুরুয়া, চালের রুটি, ইলিশ মাছ, মিষ্টি।
প্রেক্ষাপট মুক্তিযুদ্ধে বরগুনা ছিল নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের অধীন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পরে বরগুনার মুক্তিকামী সহস্রাধিক তরুণ বাঁশের লাঠি, গুটি কয়েক রাইফেল, বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করে। এরই মধ্যে পাকবাহিনী দুর্বল প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী জেলা দখল করে ফেলে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ০৬/০৫/২০১০ তারিখে আমতলী উপজেলা ভেঙ্গে তালতলীকে উপজেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
বরগুনা-৩ বাংলাদেশের একটি বিলুপ্ত সংসদীয় আসন। বাংলাদেশের বরগুনা জেলার আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে এ সংসদীয় আসন গঠিত হয়েছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী গেজেটে এই আসনটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এই আসনের সর্বশেষ সাংসদ ছিলেন শেখ হাসিনা।
বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের জেলা। এর দক্ষিণে পটুয়াখালী ও বঙ্গোপসাগর, উত্তরে ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী; পূর্বে পটুয়াখালী এবং পশ্চিমে পিরোজপুর ও বাগেরহাট।
জেলা সদরে বরগুনা শহর। একটি পৌরসভা। ৯ ওয়ার্ড ও ১৮ মহল্লা।