পাথরঘাটা থানা গঠিত হয় ১৯২৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮২ সালে।
১৮৫৯ সালের ২৪ অক্টোবর পিরোজপুর মহকুমা গঠিত হয়। রোহিনী কুমার সেন এর লেখা বাকলা এবং ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত এর লেখা বরিশালের বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯১৫ সালে পাথরঘাটা পিরোজপুর মহকুমার একটি থানা ছিল। পিরোজপুর মহকুমায় তখন ১০ টি থানার নাম পাওয়া যায়। থানাগুলোর মধ্যে একটি ছিল পাথরঘাটা। তখন পিরোজপুর মহকুমা বরিশাল জেলার আওতায় ছিল। ১৮৭১ সালে পিরোজপুর মহাকুমা থেকে পটুয়াখালী মহকুমা সৃষ্টি হয়। ১৯৬৯ সালের ১ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা গঠিত হয়। এ সময় পিরোজপুর মহকুমার পাথরঘাটা ও বামনা থানা পটুয়াখালী জেলাভূক্ত হয়। বরগুনা মহকুমা পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত ছিল। বর্তমানে পাথরঘাটা বরগুনা জেলার একটি উপজেলা। ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বরগুনা মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়। ১৯৮৩ সালের আগ পর্যন্ত পাথরঘাটা পটুয়াখালী জেলা ও বরগুনা মহকুমার অন্তর্গত ছিল। পাথরঘাটা থানা গঠিত হয় ১৯২৫ সালে। বাংলাদেশে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ১৯৮২ সালে এটি পাথরঘাটা উপজেলায় উন্নীত হয়।
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ইউনিয়ন এবং কালমেঘা ইউনিয়নের কিয়দাংশ নিয়ে ১৯৯০ সালের ৩১ মে তৃতীয় শ্রেণির (গ শ্রেণি) শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে পাথরঘাটা পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীকালে এটি খ শ্রেণীর এবং আরো পরে এটি ক শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়।পাথরঘাটা পৌরসভার বর্তমান মেয়র আনোয়ার হুসাইন আকন
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাথরঘাটার সংসদীয় আসন বরগুনা-২। পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি জাতীয় সংসদে ১১০ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত। বরগুনা-২ নির্বাচনী এলাকা ১৯৮৪ সালে গঠিত হয়েছিল, যখন পটুয়াখালী জেলাকে ভেঙ্গে দুটি জেলায় (বরগুনা ও পটুয়াখালী) ভাগ করা হয়েছিল। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ২০০১ সালের আদমশুমারির প্রকাশিত জনসংখ্যার পরিবর্তন প্রতিফলিত করার জন্য নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে। ফলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনের সীমানা পরিবর্তন হয়েছিল।
১৯৮৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে সৈয়দ রহমাতুর রব ইরতিজা আহসান জাতীয় পার্টি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৮ ও ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে নুরুল ইসলাম মনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরপর দুবার সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এবং একই বছর জুনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গোলাম সরোয়ার হিরু প্রথম বার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে এবং দ্বিতীয় বার ইসলামী ঐক্যজোটের মনোনয়ন নিয়ে দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে আবারো বিএনপির মনোনয়নে সাংসদ হন নুরুল ইসলাম মনি। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী হিসেবে সাংসদ হন গোলাম সবুর টুলু। তিনি ২০১৩ সালে ঢাকা যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে ঐবছরই উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালের এ উপ-নির্বাচনে শওকত হাচানুর রহমান রিমন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনেও তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে পাথরঘাটা–বরগুনা আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শাহজাদা আবদুল মালেক খান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে অসহযোগ আন্দোলনে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা ও কাঠালিয়া থানার নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমানের মন্ত্রিপরিষদের শিল্প প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যোগ দেন।
বরগুনা জেলা নারিকেল ও সুপারির জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও বরগুনার বিখ্যাত খাবার -চুইয়া পিঠা, চ্যাবা পিঠা, মুইট্টা পিঠা, আল্লান, বিসকি, তালের মোরব্বা, শিরনি, নাড়িকেলের সুরুয়া, চালের রুটি, ইলিশ মাছ, মিষ্টি।
প্রেক্ষাপট মুক্তিযুদ্ধে বরগুনা ছিল নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের অধীন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পরে বরগুনার মুক্তিকামী সহস্রাধিক তরুণ বাঁশের লাঠি, গুটি কয়েক রাইফেল, বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করে। এরই মধ্যে পাকবাহিনী দুর্বল প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী জেলা দখল করে ফেলে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ০৬/০৫/২০১০ তারিখে আমতলী উপজেলা ভেঙ্গে তালতলীকে উপজেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
বরগুনা-৩ বাংলাদেশের একটি বিলুপ্ত সংসদীয় আসন। বাংলাদেশের বরগুনা জেলার আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে এ সংসদীয় আসন গঠিত হয়েছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী গেজেটে এই আসনটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এই আসনের সর্বশেষ সাংসদ ছিলেন শেখ হাসিনা।
বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের জেলা। এর দক্ষিণে পটুয়াখালী ও বঙ্গোপসাগর, উত্তরে ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী; পূর্বে পটুয়াখালী এবং পশ্চিমে পিরোজপুর ও বাগেরহাট।
জেলা সদরে বরগুনা শহর। একটি পৌরসভা। ৯ ওয়ার্ড ও ১৮ মহল্লা।