পানছড়ি থানাটি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। জন শ্রুতি আছে এখানে এক সময় প্রচুর পান চাষ হতো। পান চাষের এলাকা হিসাবে এটি তখনকার সময় পানছড়ি নাম ধারণ করে বলে জানা যায়। এ উপজেলাটি আয়তন ৩৩৪.১১ বর্গ কি.মি। এতে ০৫টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। জন সংখ্যা প্রায় ৬২১৯৮ জন। পুরুষ ৫৩% মহিলা ৪৮%। সকল ধর্মের লোকের বসতি এখানে।
এ উপজেলার মৌজার সংখ্যা ০৭টি, হেডম্যান ০৭জন এবং কার্বারী ৩২ জন। এতিহ্যগত ভাবে এ উপজেলাটি পর্বত্যচট্টগ্রামে একটি ঐতিহাসিক স্থান। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পানছড়ি দুধুকছড়ায় শান্তিবাহিনীর অস্ত্র সর্ম্পনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হয়। প্রচুর গাছ গাছালি বেষ্টত উপজেলাটি মনোরম ও সৌন্দর্যমন্ডিত। এ উপজেলায় প্রচুর পরিমানে লিচু, আম, কাঁঠাল এবং বিভিন্ন ধরনে শাক সবজি উৎপাদিত হয়।
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী খাগড়াছড়ি জেলার মোট জনসংখ্যা ৫,২৫,৬৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৭৭,৬১৪ জন এবং মহিলা ২,৪৮,৩৫০ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৯৫ জন।
খাগড়াছড়ির ধর্মবিশ্বাস-২০১১
ইসলাম (৪৫.৭১%)
বৌদ্ধ (৩৯.২৮%)
হিন্দু ধর্ম (১৪.২৪%)
খ্রিস্ট ধর্ম (০.৭৭%)
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৪৫.৭১% মুসলিম, ১৪.২৪% হিন্দু, ৩৯.২৮% বৌদ্ধ এবং ০.৭৭% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ জেলায় বাঙালী জনসাধারণের পাশাপাশি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা প্রভৃতি আদিবাসী ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২°৩৮´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯২°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে খাগড়াছড়ি জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার। এ জেলার পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ এবং উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ অবস্থিত।
খাগড়াছড়ি একটি নদীর নাম। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় পরবর্তী কালে তা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে উঠে, ফলে তখন থেকেই এটি খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।
১৮৬০ সালের ২০ জুন রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি হয়। জেলা সৃষ্টির পূর্বে এর নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হয়।