The Ballpen
পিরোজপুর সদর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ - theballpen

পিরোজপুর সদর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ

25th Dec 2022 | পিরোজপুর জেলা |

দেশের অন্যান্য স্থানের মত তৎকালীন পিরোজপুর মহকুমার প্রতিটি গ্রামে গড়ে ওঠে প্রতিরোধের দূর্গ। ৭ মার্চ হতে ২৫ মার্চ পর্যন্ত মিছিল, মিটিং প্রতিদিন কমবেশি হত। গ্রামাঞ্চলের মানুষদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য ছাত্র ইউনিয়ন ন্যাপ, আওয়ামী লীগের নেতরা বেশ  সক্রিয় ছিলেন।

২৫ মার্চ ৭১ রাত ১২টা ২০ মিনিটে প্রথম পিরোজপুরে ঢাকার সংবাদ পৌছে। তখন ছাত্রলী নেতা পিরোজপুরের আঃ মালেক খান আবু পিরোজপুর শহরে মাইকে প্রচার করেন- প্রিয় দেশবাসী পাকিস্তানি হায়নারা ঢাকায় আক্রমন করেছে। আপনারা যে যেখানে আছেন সবাই যার যা আছে তাই নিয়ে থানায় উপস্থিত হউন’ এ সময় যার যা কিছু ছিল লাঠিসোটা বল্লম নিয়ে হাজার হাজার মানুষ পিরোজপুর শহরে বেরিয়ে পড়ে।

২ মার্চ ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া) শহরে বাশের লাঠি ও ডামি রাইফেল নিয়ে সদর রাস্তায় মহরা প্রদর্শন করলে পথচারী জনসাধারণ করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানায়। ৩ মার্চ বিকেলে ঢাকা থেকে আগত শামছুল হক (এম,এন,এ মঠবাড়ীয়া) ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক ও আওয়ামী লীগ নেতা বদিউল আলমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা পিরোজপুরে পাকিস্তানি পতাকায় অগ্নিসংযোগ করতে করতে মিছিল করে শহর প্রদক্ষিণ করে। ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক ২৩ মার্চ শতশত জনতার উপস্থিতিতে টাউন হল মাঠের শহীদ মিনারে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উড়িয়ে দেন। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতেই বরিশাল থেকে নূরুল ইসলাম মঞ্জুর টেলিফোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠান এসময় পিরোজপুরের আওয়াগী লীগের এম,এন এ ছিলেন অ্যাডভোকেট এনায়েত হোসেন খান। ২৫ মার্চ গভীর রাতে ছাত্রলীগ নেতা আঃ মালেক খান আবু পরদিন ২৬ মার্চ শহরবাসীকে বিকেলে টাউন হল ময়দানের জনসভায় উপস্থিত থাকতে মাইকে আহবান জানালেন সর্বদলীয় ঐ জনসভায় অ্যাডভোকেট এনায়েত হোসেন খানের অস্ত্র সংগ্রহের আবেগময় ও নির্দেশমূলক আহবান ছিল বলে জনতা টাউন হলের অদূরে অবস্থিত ট্রেজারি আক্রমন করে সমস্ত রাইফেল, বুলেট সংগ্রহ করে নেয়। অস্ত্র সংগ্রহের সময় বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ফজলুল হক খোকন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।

অস্ত্রগার লুণ্ঠনঃ

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। সংগ্রাম পরিষদের জনসভা চলছিল গোপাল কৃষ্ণ টাউন ক্লাব মাঠে। এই সভায় তদানীন্তর এম, এন,এ অ্যাডভোকেট এনায়েত হোসেন খান ঢাকায় পাকিস্তানি সৈন্যদের নৃশংস, নির্মম হত্যাকান্ডের বিবরন দিয়ে ভাষন দেয়ার সময় স্বাধীনতাকামী উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে ‘ অস্ত্র চাই অস্ত্র চাই’ ধ্বনি দিতে থাকলে তিনি জনতাকে আশ্বস্ত করে বলেন আজ এখনই অস্ত্রাগার লুন্ঠন করে তোমাদের হাতে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য অস্ত্র তুলে দেয়া হবে। বক্তব্য শেষ হওয়ার সাথে সাথে উত্তেজিত জনতা অস্ত্রাগারের দিকে এগিয়ে যায়। পিরোজপুরের মহকুমা প্রশাসকের অফিস সংলগ্ন অস্ত্রাগারটি লুণ্ঠনে নেতৃত্ব দেন অ্যাডভোকেট এনায়েত হোসেন খান, ডাঃ আব্দুল হাই, ডাঃ ক্ষিতীশ চন্দ্র মন্ডল, অ্যাডেভোকেট আলী হায়দার খান, ফজলুল হক খোকন প্রমুখ। সুশৃংখলভাবে এখান থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তারমধ্যে ৪২ টি রাইফেল হস্তগত করে নকশালপন্থীরা, ২২ টি বন্দুক চলে যায় শান্তি কমিটির হাতে। ২৮ মার্চ পিরোজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এখানে সাধারণ মানুষদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরু হয়।





Related

পিরোজপুর জেলা কি জন্য বিখ্যাত?

 পিরোজপুর জেলা নারিকেল, সুপারি, পেয়ারা, আমড়া এর জন্য বিখ্যাত।

প্রবাদ প্রবচন ও বিয়ের গানের জন্য পিরোজপুর বিখ্যাত। বর্তমানে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, দিশারী শিল্পী গোষ্ঠী,সংগীতা, ধ্বনি শিল্পী গোষ্ঠী, রুপান্তর নাট্য গোষ্ঠী, পিরোজপুর থিয়েটার, কৃষ্ণচুড়া থিয়েটার, বলাকা নাট্যম্ প্রভৃতি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী আঞ্চলিক ঐতিহ্য লালন পালন ও প্রচারে একাগ্র প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।



Related

পিরোজপুর কত নম্বর সেক্টরে ছিল?

মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুর ছিল মুক্তিযুদ্ধের নবম সেক্টরের অধীন সুন্দরবন সাব-সেক্টর মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ এর কমান্ডের আওতায়।



Related

পিরোজপুর জেলার ভৌগোলিক সীমানা

পিরোজপুরের উত্তরে বরিশাল জেলা ও গোপালগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরগুনা জেলা, পূর্বে ঝালকাঠি জেলা ও বরগুনা জেলা এবং পশ্চিমে বাগেরহাট জেলা ও সুন্দরবন অবস্থিত। পশ্চিমে বলেশ্বর নদী পিরোজপুরকে বাগেরহাটের থেকে আলাদা করেছে।



Related

পিরোজপুর জেলার জনসংখ্যা কত?

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পিরোজপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ১১,১৩,২৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫,৪৮,২২৮ জন এবং মহিলা ৫,৬৫,০২৯ জন। মোট পরিবার ২,৫৬,০০২টি।



Related

পিরোজপুর জেলার ভূ-ভাগের গঠন

পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক মতে, ঋগবেদের আমলেও বঙ্গের দক্ষিণভাগ ছিল অতল সমুদ্রে নিমজ্জিত। মৌর্যযুগে পলল সংযোগে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ গড়ে ওঠলে ভূ-তাত্ত্বিকভাবে ক্রমশ পিরোজপুর ভূ-ভাগের পলল উত্থান ঘটে। পৌরাণিক নদী গঙ্গার পূর্বগামী শাখা নলিনী, হলদিনী, পাবনী নামে পরিচিত ছিল। পৌরাণিক নদীর উত্তরসূরী আধুনিক গঙ্গা, পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র, সুগন্ধার পলিরেণু গাঙ্গেয় বদ্বীপে যে সব দ্বীপ তথা নব্য ভূ-ভাগ সৃষ্টি করে, পিরোজপুর জেলার জনপদ সে সব দ্বীপেরই অংশবিশেষ। তবে জনপদ হিসেবে গড়ে ওঠেছে আরও পরে। ঐতিহাসিকদের ধারণায় পাল ও সেন আমলে বিচ্ছিন্নভাবে জনবসতি গড়ে উঠতে শুরু করলেও মূলত মোগল ও সুলতানি আমলে এ অঞ্চলে ব্যাপক জনবসতি গড়ে ওঠে। তবে উনিশ শতক পর্যন্ত পিরোজপুর জেলার একটি অংশ ছিল জলাশয়। এর মধ্যে স্বরূপকাঠির সাতলা, নাজিরপুরের বিল ও ভান্ডারিয়া অঞ্চলে চেচরি-রামপুর বিল অন্যতম।