ফটিকছড়ি উপজেরার নদ-নদীর সংখ্য ০২ টি। এগুলো হচ্ছেঃ- ০১। হালদা নদী ০২। এবং ফেনী নদী। হালদা নদীঃ- হালদা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি নদী। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাটনাতলী পাহাড় হতে উৎপন্ন হয়ে এটি ফটিকছড়ির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে। এটি এর পর দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পরে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ফটিকছড়ির বিবিরহাট, নাজিরহাট, সাত্তারঘাট, ও অন্যান্য অংশ, হাটহাজারী, রাউজান, এবং চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালী থানার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এটি কালুরঘাটের নিকটে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার, যার মধ্যে ২৯ কিলোমিটার অংশ সারা বছর বড় নৌকা চলাচলের উপযোগী থাকে। এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখানে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে এবং নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। হালদার সাথে বাংলাদেশ এর অন্যান্য নদী যেমন পদ্মা নদী,মেঘনা নদী,যমুনা নদীর সংযোগ না থাকাতে রুই জাতীয় মাছের "জীনগত স্টক" সম্পূর্ণ অবিকৃত রয়েছে। নামকরণঃ-হালদা খালের উতপত্তি স্থল মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের পাহাড়ী গ্রাম সালদা। সালদার পাহাড়ী র্ঝণা থেকে নেমে আসা ছড়া সালদা থেকে হালদা নামকরণ হয়। সালদা নামে বাংলাদেশে আরো একটি নদী আছে যেটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে উৎপন্ন ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। উপনদীসমূহঃ-হালদা নদীতে পতিত দুপাশের উপনদীগুলো প্রশস্ততার বিচারে সাধারণত নদীর পর্য্যায়ে পড়েনা। বেশিরভাগ ঝোড়া, ছড়া, খাল কিংবা ঝর্ণা জাতীয়। তবে মানিকছড়ি, ধুরুং এবং সর্তা যথেষ্ট প্রশস্ত। পূর্বদিক হতে যেসব খাল হালদার সাথে মিলিত হয়েছে তার উৎপত্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে। পশ্চিম দিক হতে আসা খালগুলোর উতপত্তি স্থল সীতাকুণ্ড পাহাড়। দুই পাহাড়ের মাঝখানে হালদা নদী প্রবাহিত হয়েছে উত্তর দিক হতে দক্ষিণ দিকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় থেকে উৎপন্ন খালগুলো হচ্ছে মানিকছড়ি, ধুরুং, তেলপারই, সর্তা, কাগতিয়া এবং ডোমখালী খাল। সীতাকুন্ড পাহাড়ী রেঞ্জ হতে উৎপন্ন হওয়া খালগুলোর মাঝে আছে গজারিয়া,ফটিকছড়ি,হারুয়ালছড়ি, বারমাসিয়া, মন্দাকিনী, বোয়ালিয়া এবং পোড়া কপালী খাল। ফেনী নদীঃ-এই নদী সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায় নি।
চট্টগ্রাম জেলার মোট আয়তন ৫,২৮২.৯২ বর্গ কিলোমিটার (১,৩০৫,৪৩৮ একর)। আয়তনের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা।
চট্টগ্রাম জেলার মোট জনসংখ্যা ৯১,৬৩,৭৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫,৬৬,০৩৯ জন এবং মহিলা ৪৫,৯৭,০৭৬ জন এবং বাকি ৬৪৫ জন হিজড়া । জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৭০০ জন।(২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী)
চট্টগ্রামের ধর্মবিশ্বাস-২০২২
ইসলাম (৮৭.৪৭%)
হিন্দু ধর্ম (১০.৭০%)
বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্ম (১.৮৩%)
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৮৭.৪৭% মুসলিম, ১০.৭০% হিন্দু এবং ১.৮৩% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে ২১°৫৪´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৭´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ২৫৯ কিলোমিটার। এ জেলার দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা; পূর্বে বান্দরবান জেলা, রাঙ্গামাটি জেলা ও খাগড়াছড়ি জেলা; উত্তরে ফেনী জেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। এছাড়া দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপ চট্টগ্রামের অংশ।
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। তিন পার্বত্য জেলা এ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে পার্বত্য এলাকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ জেলা ভেঙ্গে কক্সবাজার জেলা গঠিত হয়।
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। তিন পার্বত্য জেলা এ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে পার্বত্য এলাকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন করা হয়।