উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত বগুড়া সদর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বিশ্বরোড নামক প্রশসত্ম সড়ক। বাংলাদেশের একমাত্র ফাউন্ড্রি শিল্পখ্যাত বগুড়া সদর উপজেলা। ফাউন্ড্রি শিল্পের পাশাপাশি বর্জ্য তুলা, ঝুট কাপড়, সাবান, বেডসীট মশারী কাপড়, জুট মিলস, পেপার মিলস, ফিড মিলস, সিমেন্ট কারখানা, পোল্ট্রিশিল্প সহ এগ্রো বেসড্ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ সব শিল্প প্রতিষ্ঠান হতে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন হয়। যা অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, কানাডা সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তান্তি বাজারে প্রবেশ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
এ উপজেলায় মহাসড়কের দু’পাশে অবস্থান করছে প্রকৃতির অপরূপ সাজে সজ্জিত বগুড়া সদর উপজেলার গ্রামগুলো। উপজেলাটি খাদ্য শস্য ও শাকসবজি উৎপাদনের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত। এ জনপদের জনসাধারণের বহুদিনের আশা-আকাংখার প্রতিক শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শহীদ চাঁন্দু আমত্মর্জাতিক ক্রিকেট ষ্টেডিয়াম, জাতীয় কম্পিউটার প্রশিÿণ ও গবেষণা একাডেমী, এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ অন্যতম নারী সংগঠন পরবর্তীতে এনজিও হিসাবে পরিচিত ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ ( টিএমএসএস) এর সদর দপ্তর এ উপজেলার মধ্যে অবস্থিত। এছাড়া, গোকুল ইউনিয়নে মেধ নামক স্থানে ঐতিহাসিক বেহুলা - লক্ষিনদরের বাসর ঘর, চাঁদমুহা হরিপুর-সাহার বিল এলাকায় চাঁদ সওদাগরের বসতবাড়ি, নামুজা ইউনিয়নের চিংগাসপুরে পদ্মাদেবীর বাড়ি, লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের রায়-মাঝিড়ায় কালু গাজীর কোর্ট এবং নুনগোলা ইউনিয়নের হাজরাদিঘী এবতেদায়ী মাদ্রাসা সংলগ্ন সাপের ওঝাঁ ধনমত্মরীর বাড়ি অবস্থিত। উপজেলার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় সার্কিট হাউজ সংলগ্ন নবাববাড়ি যা বর্তমানে প্যালেস মিউজিয়াম ও কারুপলস্নী নামে বহুল পরিচিত। ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ ও বগুড়ার উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি যা ১৮৫৪ সালে স্থাপিত হয়েছে। উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি সংলগ্ন স্থানে বৃটেনের রাজ পরিবারের সদস্য এ্যাডওয়ার্ড সপ্তম জজ এর একটি প্রাচীন ভাস্কর রয়েছে। বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদৎ বরণকারি দেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট ৭জন বীরশ্রেষ্ট সমত্মানের স্মৃতিসত্মম্ভ স্থাপনা উলেস্নখ্যযোগ্য। উত্তরবঙ্গে সর্বপ্রথম আমত্মর্জাতিক মানের চার তারাকা হোটেল নাজ গার্ডেন এবং শিশুদের চিত্তবিনোদনের স্থান ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক সদর উপজেলাতেই অবস্থিত। এ উপজেলায় তদানিমত্মন পাকিসত্মানের প্রধানমন্ত্রী জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী চৌধূরী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক রোমেনা আফাজ, এম.আর আকতার মুকুল, বি.এম ইলিয়াস, ভাষা সৈনিক গাজীউল হক, পলস্নী কবি রোসত্মম আলী কর্ণপুরী, কণ্ঠশিল্পি আঞ্জুমান আরা জম্ম গ্রহণ করেছেন।
৮৮.৫০ ডিগ্রী পূর্ব থেকে ৮৮.৯৫ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এবং ২৪.৩২ ডিগ্রী উত্তর থেকে ২৫.০৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশে বগুড়া সদর উপজেলা অবস্থিত।
বগুড়ার উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট, উত্তর পশ্চিমে জয়পুরহাটের অংশবিশেষ,পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে নওগাঁ, দক্ষিণে নাটোর ও সিরাজগঞ্জের অংশবিশেষ এবং দক্ষিণ পূর্বে সিরাজগঞ্জের অবশিষ্ট অংশ বিদ্যমান। বগুড়ার পূর্বে জামালপুর থাকলেও এর স্থলভাগ সংযুক্তভাবে অবস্থিত নয়।
বগুড়া ভৌগোলিকভাবে ভূমিকম্পের বিপজ্জনক বলয়ে অবস্থিত। তাছাড়া বগুড়া জেলা বরেন্দ্রভূমির অংশবিশেষ যা ধূসর ও লাল বর্ণের মাটির পরিচিতির জন্য উল্লেখ্য।
বগুড়া জেলার জনসংখ্যা মোট: ৩৭,৩৪,৩০০ জন
পুরুষ:৪৯.৬০%
মহিলা:৫০.৪০%|উত্তরবঙ্গের ১৬ টি জেলার মধ্য জনসংখ্যায় বৃহত্তম জেলা হচ্ছে বগুড়া। এবং সারা বাংলাদেশে ষষ্ঠ বৃহত্তম জেলা।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতকে বগুড়া মৌর্য শাসনাধীনে ছিল। মৌর্য এর পরে এ অঞ্চলে চলে আসে গুপ্তযুগ । এরপর শশাংক, হর্ষবর্ধন, যশোবর্ধন পাল, মদন ও সেনরাজ বংশ ।
সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবনের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন বগড়া ১,২৭৯ থেকে ১,২৮২ পর্যন্ত এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন। তার নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছিল বগড়া (English:Bogra)। ইংরেজি উচ্চারন 'বগড়া' হলেও বাংলায় কালের বিবতর্নে নামটি পরিবর্তিত হয়ে 'বগুড়া' শব্দে পরিচিতি পেয়েছে। ২ এপ্রিল ২০১৮ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে বগুড়ার ইংরেজি নাম Bogura করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বগুড়া জেলার সংসদীয় আসন :৭টি