বাকেরগঞ্জ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগোলিক অবস্থান এ অঞ্চলের মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে। এ অঞ্চলে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে, ধর্ম প্রচারের জন্য, রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বাঁ বসবাসের জন্য যে সব মণীষী বা মানবপ্রেমী এখানে এসেছিলেন তাঁদের সংস্পর্শে এ অঞ্চলের ভাষা প্রভাবিত হলেও বাংলা ভাষা এখানে নিজস্ব বৈশিষ্ট নিয়ে শাণিত হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এই উপজেলার ভাষা ঢাকার সাথে কোন কোন অংশে ব্যপক মিল আছে এবং উচ্চারণেও প্রায় সমতূল। "ক" স্থানে "অ" এবং "অ" স্থানে "হ" উচ্চারণ প্রায়ই হয়ে থাকে। "ধ" স্থানে "দ", "ভ" স্থানে "ব" ইত্যাদি। এখানকার কথ্য ভাষায় "হ" এর প্রতি অহেতুক দুর্বার আকর্ষণ এবং "স" এর প্রতি চরম অণীহা পরিলক্ষিত হয়। "কি কর" শব্দে "কি অর" অথবা " কি হর" এরুপ উচ্চারণ করা হয়। ঘ, ধ, ব -এ তিন বর্ণের উচ্চারণ নেই বললেই চলে। "বেটা" স্থলে "বেডা", "ফাটা" স্থলে "ফাডা", "যাব" স্থলে "যামু", "খাব" স্থলে "খামু", "বসব" স্থলে "বসমু", "হাট" স্থলে "আট" ব্যবহৃত হয়। মূল শব্দের সাথে অতিরিক্ত বর্ণ যোগ করেও উচ্চারণ করা হয়।
যেমন মেয়েকে- মাইয়া, কবরকে- কয়বর, আজানকে আয়জান ইত্যাদি। ভাষার একটি আলতো টান আদব-কায়দা, আদর-স্নেহ ও বিনয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। যেমন- 'রইশ্যা (রশিদ) মোগো পোলার চেয়েও বেশি'। এখানে রশিদকে আদর স্নেহ প্রকাশে 'রইশ্যা' বলা হয়েছে। আঞ্চলিক ভাষায় কাব্যিক শব্দের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন- মুই, মোরা প্রাচীন কাব্যে ব্যবহৃত ব্রজ ভাষা (হিন্দি থেকে আগত), মনু (ব্রাহ্মণ পুত্রকে আদর করে সম্বোধনকরণ অর্থে), পোলা- মালাবার ঊপকূলে ইসলামের অনুসারী মোপালাদের অপভ্রংশ শব্দ। এ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় বহু বিদেশী শব্দ প্রচলিত। যেমন- কুত্তা (হিন্দি), বিলই (ওলন্দাজ), জাম্বুরা, ইন্দুর (অস্ট্রিক) ইত্যাদি।
তৎকালীন সময়ের প্রভাবশালী জমিদার আগা বাকের খানের নামানুসারে এ জেলার নামকরণ হয়। ১৮০১ সালের ১লা মে স্যার জন শ্যোর এ জেলার সদর দপ্তর বর্তমানে বরিশাল শহরে স্থানান্তরিত করেন। পরবর্তীতে বরিশাল নামেই এ জেলা পরিচিতি পায়। ১৮১৭ সালে এই জেলা একটি কালেক্টরেটে পরিণত হয়।
পাকিস্তান আমলেই পটুয়াখালী মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮৪ সালে বাকি চারটি মহকুমা জেলায় রূপান্তরিত হয় এবং বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ভোলা ও ঝালকাঠী এই ছয়টি জেলা নিয়ে ১৯৯৩ সালের ১লা জানুয়ারি বরিশাল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়।
সাক্ষরতার হারের এ চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা, ২০২২-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে। জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাক্ষরতার হারে সবচেয়ে এগিয়ে ঢাকা বিভাগ, হার প্রায় ৭৯। এর পরে রয়েছে বরিশাল, ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
বরিশাল জেলা আমড়া এর জন্য বিখ্যাত। তাছাড়া বরিশালকে বাংলার ভেনিস বলা হয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮৪ সালে বাকি চারটি মহকুমা জেলায় রূপান্তরিত হয় এবং বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ভোলা ও ঝালকাঠী এই ছয়টি জেলা নিয়ে ১৯৯৩ সালের ১লা জানুয়ারি বরিশাল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়।