উত্তরবঙ্গ রাজশাহীর এক গৌরব গাঁথা স্থান হচ্ছে বাগমারা উপজেলা। কথিত আছে এখানে এক সময় বন-জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। বনে থাকতো ভয়ঙ্কর যত বাঘ-বাঘিনী। একদিন এক লোককে বাঘে আক্রমণ করলে তিনি তাঁর হাতে থাকা লাঠি দিয়ে সেই বাঘ কে মেরে ফেলেন। ফলশ্রম্নতিতে এ উপজেলার নামকরণ হয় ‘‘বাগমারা’’। আবার শোনা যায় ব্রিটিশ আমলে বিস্তীর্ণ বন-জঙ্গল কেটে জনবসতি গড়ে উঠায় উপজেলার নামকরণ করা হয় ‘‘বাগমারা’’। এছাড়াও কথিত আছে বর্তমান বাগমারা থানা ভবন জমির উপর বিরাট একটি বাগান ছিল। বাগানটি কেটে থানা ভবণ নির্মাণের কারণেও অঞ্চলটি ‘‘বাগমারা’’ নামে পরিচিতি পায়। বাগমারার প্রাচীন জায়গা হিসেবে তাহেরপুর দেশ ও বিদেশে পরিচিতি লাভ করে। জানা যায় বাংলার বার ভূইয়ার অন্যতম তাহের ভূইয়া সদলবলে তাহেরপুর আসেন এবং তাঁর নামানুসারে ‘‘তাহেরপুর’’ নামকরণ হয়। তাহের ভূইয়া ইংরেজ শাসকদের খাজনা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইংরেজ সেনাবাহিনী তাহের ভূইয়াকে যুদ্ধের মাধ্যমে পরাজিত করে রাজা কংস নারায়ন কে খাজনার বিনিময়ে তাহেরপুরের রাজত্ব প্রদান করে। ১৪৮২ সালে রাজা কংস নারায়ন উপমহাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করেন। তখন থেকেই প্রতি বছর হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীরা তাদের ধর্মের প্রধান উৎসব হিসেবে শারদীয় দুর্গাপূজা পালন করে আসছে। বাগমারা উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ সালে। ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে তাহেরপুর এবং বীরকুৎসা উল্লেখযোগ্য ।
রজশাহী জেলা আম, রাজশাহী সিল্ক শাড়ি, খেজুরের গুড় এবং শংকরের ক্ষীরের চমচম এর জন্য বিখ্যাত।
রাজশাহীর অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খাবার কলাইয়ের রুটি। দেশ স্বাধীনের পর সত্তর দশকেই রাজশাহী শহরে ও বাংলেদেশে কলাইয়ের রুটি বিক্রির সূচনা হয়। পূর্বে নিম্ন আয়ের শ্রমিক শ্রেণির মানুষ কলাইয়ের রুটি কিনে খেলেও এখন সব পেশার মানুষের কাছেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মহানগরীর সব এলাকাতেই ফুটপাতে খুপড়ি মত অথবা ছোট কলাইয়ের রুটির দোকান আছে। বর্তমানে রেস্টুরেন্টের মতো উন্নত আয়োজনে কলাইয়ের রুটির দোকানের সংখ্যার ক্রম বৃদ্ধি ঘটছে।
রাজশাহী শহরকে কেন্দ্র করে ১৭৭২ সালে জেলা গঠন করা হয়। ১৮৭৬ সালে গঠিত হয় রাজশাহী পৌরসভা। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়।
বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন জনপদ হলাে পুণ্ড্র। বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অবস্থানভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে পুণ্ড্র জনপদ। প্রাচীন পুণ্ড রাজ্যের রাজধানী ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর।