বেতাগী শব্দের নামকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মত রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশের মতে বেদাগী থেকে বেতাগী নামের সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করা হয়। অষ্টাদশ প্রথম দিকে ইংরেজ শাসকরা শত শত নিরীহ লোক ধরে এনে দক্ষিণ জনপদে লবণ চাষ করাতে কৃষকদের উপর নানারকম জোর জবরদস্তি ও নির্যাতন চালাতো। এমনকি তাদেরকে তামাক সেবনেও অভ্যস্ত করতো বলে জানা যায়। এসময় তৎকালীন শাসনামলে বুজুর্গ উমেদপুরের প্রতাপশালী জমিদার ও কৃষক নেতা আইন উদ্দীন সিকদার এ অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন ও গড়ে তোলেন ও কৃষকদের সংগঠিত করে লবণ চাষের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেন। এতে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় অনেক ইংরেজও মারা যায়।
ইংরেজরা আইন উদ্দিন সিকদারের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে ও তাকে কুখ্যাত ডাকাত হিসেবে আখ্যায়িত করে। ১৭৮৯ সালে তার জমিদারী কেড়ে নেয়া হয় এবং তাকে গ্রেফতার করে নির্বাসনে পাঠানো হয়। সে সময়ের ধর্মীয় নেতা নেয়ামত শাহের নিকট এলাকার জনসাধারন আইন উদ্দিন সিকদারের মুক্তির জন্য সাহায্য চাইলে তিনি তৎকালীন ঢাকাস্থ মোগল সুবেদার ইসলাম খার নিকট আইন উদ্দিন সিকদারের পক্ষে সুপারিশ করে একটি পত্র প্রেরণ করেন। এ চিঠিতে তাকে দাগী নয়, বেদাগী (অপরাধী নয়) বলে আখ্যায়িত করে। ফরাসী শব্দ বেদাগী থেকেই কালক্রমে বেতাগী শব্দের রুপান্তরিত হয়ে বেতাগীর উদ্ভব হয় বলে ধারণা করা হয়।
এছাড়া বেতাগী অঞ্চলে আগে অনেক বেত পাওয়া যেত এবং বেতের আগা একটি জনপ্রিয় সবজি হিসাবে সকলের কাছে বেশ কদর ছিল। সেই "বেতাগা" এর সূত্র ধরে বেতাগীর উৎপত্তি হতে পারে। বেতাগীর নামকরণে আবার কেউ কেউ মনে করেন, ইংরেজদের কাউকে কোন কাজে বাধ্য না করাতে পারলে চরম বেত্রাঘাত করত। এখানের মানুষ প্রতিবাদী হওয়ার কারণে আরও বেশি বেত্রাঘাতের স্বীকার হত। এই বেত্রাঘাত শব্দানুসারে বেতাগী নামের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশাসন বেতাগী থানা গঠিত হয় ১৯২০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। ১৯৮৩ সালে বেতাগী উপজেলা উদ্বোধন করেন তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী মেজর জেনারেল এম এ মুমীন।
বরগুনা জেলা নারিকেল ও সুপারির জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও বরগুনার বিখ্যাত খাবার -চুইয়া পিঠা, চ্যাবা পিঠা, মুইট্টা পিঠা, আল্লান, বিসকি, তালের মোরব্বা, শিরনি, নাড়িকেলের সুরুয়া, চালের রুটি, ইলিশ মাছ, মিষ্টি।
প্রেক্ষাপট মুক্তিযুদ্ধে বরগুনা ছিল নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের অধীন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পরে বরগুনার মুক্তিকামী সহস্রাধিক তরুণ বাঁশের লাঠি, গুটি কয়েক রাইফেল, বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করে। এরই মধ্যে পাকবাহিনী দুর্বল প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী জেলা দখল করে ফেলে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ০৬/০৫/২০১০ তারিখে আমতলী উপজেলা ভেঙ্গে তালতলীকে উপজেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
বরগুনা-৩ বাংলাদেশের একটি বিলুপ্ত সংসদীয় আসন। বাংলাদেশের বরগুনা জেলার আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে এ সংসদীয় আসন গঠিত হয়েছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী গেজেটে এই আসনটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এই আসনের সর্বশেষ সাংসদ ছিলেন শেখ হাসিনা।
বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের জেলা। এর দক্ষিণে পটুয়াখালী ও বঙ্গোপসাগর, উত্তরে ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী; পূর্বে পটুয়াখালী এবং পশ্চিমে পিরোজপুর ও বাগেরহাট।
জেলা সদরে বরগুনা শহর। একটি পৌরসভা। ৯ ওয়ার্ড ও ১৮ মহল্লা।