দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ভোলাহাট উপজেলার ভূ-প্রকৃতি যেমন পৃথক, এখানকার মানুষের মুখের ভাষারও তেমন স্বাতন্ত্র রয়েছে। পন্ডিতেরা এ ভাষাকে গৌড় বরেন্দ্রী উপভাষা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী ও সমগ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বৃহৎ অংশ গৌড় বরেন্দ্রভূমির অন্তর্ভূক্ত। এ কারণে ভোলাহাট এর ভাষাকে সাধারণত: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভাষা হিসেবে অনেকে আখ্যায়িত করলেও ভোলাহাটের ভাষার ক্ষেত্রে কিছুটা স্বতন্ত্রতা, বৈচিত্র ও বিশেষত্ব রয়েছে।
ভোলাহাটের ভাষা বিভিন্ন অঞ্চলের সম্মিলিত ভাষার সংমিশ্রণ বললেও খুব বেশী বাড়িয়ে বলা হয় না। এ ভাষার মধ্যে রয়েছে রাঢ় ও বংগীয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও মালদহ জেলার কালিয়াচক, মানিকচক, রতুয়া, বামনগোলা হাবিবপুর ও টাঁড়া এলাকাসহ মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা ও জংগীপুর এবং পূর্ণিয়া জেলার কিয়দাংশ মানুষের ভাষাগত মিশ্রণের ছায়া লক্ষণীয়। যাকে আমরা এক কথায় বৃহত্তর গৌড়িয়া উপভাষা হিসেবেও আখ্যায়িত করতে পারি।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রহনপুর তথা গোমস্তাপুর উপজেলার এই এলাকা ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৯৭১ এ পাকিস্তানি বাহিনী তাদের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামটি সাম্প্রতিকালের। জেলাবাসীর দাবির মুখে ২০০১ সালের ১লা আগস্ট সরকারিভাবে নবাবগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রাখা হয়। পূর্বে এই এলাকা 'নবাবগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল।
কালাই রুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় খাবার৷ এটি পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবারও বটে। এক সময় কালাই এর সহজলভ্যতার কারণে এই অঞ্চলে এই রুটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। এই এলাকার প্রত্যেক মেয়েই জানে জানে কীভাবে এই রুটি বানাতে হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত, কারণ গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অর্থনীতির প্রধান উৎস।
রাজধানী ঢাকা থেকে ৩২০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং রাজশাহী থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ অবস্থিত।