হবিগঞ্জের লাখাই থানার ভাটি অঞ্চলের কৃষ্ণপুর গ্রামের অধিবাসীদেরকে বর্ষাকালে নৌকায় ও শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে চলাচল করতে হয়। গ্রামের দক্ষিণে বলভদ্র নদী। . মুক্তিযুদ্ধকালীন লাখাই থানার পশ্চিমে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমার (বর্তমানে জেলা) অষ্টগ্রাম থানায় পাকিস্তানি সেনাছাউনি স্থাপিত হয়। সেখান থেকে ২০ সেপটেম্বর ভোরে ৮-১০টি নৌকা ও একটি স্পিডবোটে করে বলভদ্র নদীপথে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও রাজাকার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য কৃষ্ণপুর গ্রামে পৌঁছে নৌকা থেকে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণের ফলে এলাকার মানুষ, গবাদি পশু মারা পড়তে থাকে। প্রায় ঘণ্টা তিনেক গুলি বর্ষণ করার পর পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকাররা গ্রামে প্রবেশ করে যাঁকে সামনে পায় তাঁকেই গুলি করে ও বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করতে থাকে।
অনেক শিশুকে তারা নদীতে ছুড়ে ফেলে দেয়। গ্রামের নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু নির্বিশেষে সবাইকেই নির্যাতন করতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে তারা ছোটো ছোটো ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে গ্রামের তিন দিকে অবস্থান নেয়। একটি দল ৩২জন গ্রামবাসীকে ধরে ননিগোপাল রায়ের বাড়িতে এনে জড়ো করে গুলি চালায় এবং এতে ২৮জন গ্রামবাসী শহিদ হন। মঞ্জু রায় ও বিশ্বনাথ রায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এবং বনবিহারী রায় ও নবদ্বীপ রায় মরার ভান করে পড়ে থেকে প্রাণে বেঁচে যান । শহিদদের নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয় নি। আরেকটি দল গ্রামের চণ্ডীপুর পাড়ার ১২-১৪জনকে ধরে এনে একটি স্থানে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখে। সুযোগ বুঝে অনেকে ধানক্ষেতের ভিতরে লুকিয়ে প্রাণরক্ষা করেন। কিন্তু ভয়ে পালাতে না পেরে এঁদের মধ্যে ৫জনকে প্রাণ দিতে হয়। শেষ দলটি গ্রামের গজাইনগর পাড়ায় অভিযান চালিয়ে বেছে বেছে বলিষ্ঠ যুবকদেরকে বন্দি করে একটি জায়গায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। তাঁদের নাম জানাসম্ভব হয় নি।
এই গণহত্যার পর ধ্বংসপ্রায় কৃষ্ণপুর গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে অসংখ্য মৃত দেহ ও আহত লোকজন। অক্ষত অবস্থায় গ্রামের মাত্র ৮জন পুরুষ জীবিত ছিলেন। এতগুলো মৃতদেহ সৎকার করা বা আহতদেরকে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় নি। পশু আর মানুষের মৃতদেহ ভাসছিল নদীর পানিতে। কত লাশ পানিতে ভেসে গেছে তার সংখ্যা জানা যায় নি। শিয়াল, কুকুর আর শকুনে ভক্ষণ করেছে প্রায় ১০৮টি লাশ।
মৌলভীবাজার এর অর্থনীতির প্রধান ভীত হলো চা শিল্প ও রাবার শিল্প । এ জেলায় প্রচুর পরিমানে চা ও রাবার উৎপাদিত হয় । এ ছাড়াও এ জেলার অর্থনীতিতে এই জেলার পর্যটন শিল্পও বিশেষ ভাবে উল্ল্যেখযোগ্য, তা ছাড়াও এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় শিল্প যা মৌলভীবাজার জেলার অর্থনীতিকে করছে সমৃদ্ধশালী ।
হবিগঞ্জ জেলার আর দশটি সাধারণ মানুষ ভাত মাছ খেলে এখানকার একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী মূলত প্রধান খাবার হিসেবে "ছিকর" নামের একটি খাবার গ্রহণ করে থাকে। অবাক করার বিষয় হল এটি এটেল মাটি দ্বারা নির্মিত একটি খাবার। প্রথমে স্বচ্ছ মিহি এটেল মাটি রোদে শুকোতে হয়।
বাহুবল উপজেলা প্রাকৃতিক বৈচিত্রে ভরপুর উপজেলা। এই উপজেলায় একই সাথে পাহাড়ী টিলা সমতল ভহমি এবং হাওড় অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এই উপজেলায় ৭টি চা-বাগান উপজেলাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করে তোলেছে। তা ছাড়া এইখানে নির্মাণাধীন ৫ তারকা বিশিষ্ট দি প্যালেস আকর্ষনের বিষয় বসত্মত্মুতে পরিণত হয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম গ্যাস ফিল্ড বিবিয়ানা । এটি কে পি আই শ্রেণীর স্থাপনা যা ৪ নং দীঘলবাক ইউনিয়ন ও ৩ নং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জের সৈয়দপুর বাজার হতে মাত্র ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে পাকা সড়কে ধরে গেলেই বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড দেখতে পাওয়া যায় ।
১৯৪৭ সালের ১৩ই আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বদিন পর্যন্ত সিলেট আসামের একটি জেলা হিসেবে গণ্য ছিল। অর্থাৎ এই সময়ে নবীগঞ্জ আসাম প্রদেশের একটি জেলা হিসেবে সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল।