আধুনিক ক্রীড়াশৈলীর অনন্য পীঠস্থান রাজশাহী স্টেডিয়াম রাজশাহীবাসীর অন্যতম গৌরবস্থল। এখানে ২০ হাজারেরও অধিক দর্শকের স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা রয়েছে। ১৯৬০ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক খান মোহাম্মদ শামসুর রহমান এই স্টেডিয়ামের সূচনা করেন। পরবর্তীকালে জেলা প্রশাসক আর.পি.এ. নাজির এর পূর্ণ রূপায়ন করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেটে রাজশাহীর রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। রাজশাহীকে ক্রিকেটারদের জন্মভূমিও বলা যায়। পাকিস্তান আমল থেকেই রাজশাহীর শান্তিপ্রিয় ছেলেরা ক্রিকেটের ক্ষেত্রে এক অনবদ্য ইতিহাসের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট রাজশাহীর গর্ব। জাতীয় ফুটবলে যাদের অবদান অনস্বীকার্য তারা হলেন প্রয়াত ফিরোজ আহমেদ, শামসুল হক, জালু। কাবাডিতে বিশেষ অবদানের জন্য প্রথমেই আসে সাবেক খেলোয়াড় রওশন ইয়াজদানী এর নাম। ভলিবলে যারা আছেন তারা হলেন মিঠু, সেলিম প্রমূখ।
ক্রিকেট ছাড়াও ফুটবল, সাতার, এথলেটিক্স, সাইক্লিং, ভলিবল, হকি ইত্যাদি খেলাধুলাতেও রাজশাহী সর্বদাই এগিয়ে আছে। প্রমত্ত পদ্মা নদী রাজশাহীতে জন্ম দিয়েছে অনেক নামী দামী সাতারুর।
রাজশাহী জেলা প্রশাসন রাজশাহীর জনগণের খেলাধুলার প্রতি এই প্রচন্ড আগ্রহকে সম্মান জানিয়ে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ভেন্যু হিসাবে রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামকে মনোনীত করায় সারা রাজশাহী মেতেছে এক সাজ সাজ উৎসবে। সঠিক দিক নির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা শান্তির নগরী রাজশাহীকে পরিণত করবে এক ক্রীড়া সূতিকাগারে।
রজশাহী জেলা আম, রাজশাহী সিল্ক শাড়ি, খেজুরের গুড় এবং শংকরের ক্ষীরের চমচম এর জন্য বিখ্যাত।
রাজশাহীর অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খাবার কলাইয়ের রুটি। দেশ স্বাধীনের পর সত্তর দশকেই রাজশাহী শহরে ও বাংলেদেশে কলাইয়ের রুটি বিক্রির সূচনা হয়। পূর্বে নিম্ন আয়ের শ্রমিক শ্রেণির মানুষ কলাইয়ের রুটি কিনে খেলেও এখন সব পেশার মানুষের কাছেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মহানগরীর সব এলাকাতেই ফুটপাতে খুপড়ি মত অথবা ছোট কলাইয়ের রুটির দোকান আছে। বর্তমানে রেস্টুরেন্টের মতো উন্নত আয়োজনে কলাইয়ের রুটির দোকানের সংখ্যার ক্রম বৃদ্ধি ঘটছে।
রাজশাহী শহরকে কেন্দ্র করে ১৭৭২ সালে জেলা গঠন করা হয়। ১৮৭৬ সালে গঠিত হয় রাজশাহী পৌরসভা। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়।
বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন জনপদ হলাে পুণ্ড্র। বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অবস্থানভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে পুণ্ড্র জনপদ। প্রাচীন পুণ্ড রাজ্যের রাজধানী ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর।