রায়পুরা অঞ্চলটি প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু বসতিপূর্ণ এলাকা হিসাবে খ্যাত। ‘রায়পুরা’ শব্দটির ঐতিহাসিক ভিত্তি বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় যে, পূর্বেকার ‘রায়’ বংশীয় জমিদারদের জমিদারী এলাকাভু্ক্ত অঞ্চল হিসেবে প্রাধান্য লাভ করে। আর সেই থেকে ‘রায়পুরা’ নামের উৎপত্তি ঘটেছে বলে জনশ্রুতিতে ধারণা করা হয়। রায়পুরা একটি নৈস্বর্গিক ভূ-খন্ড। মেঘনা আর তার শাখা-প্রশাখার জলবিধৌত অন্যতম স্থলভাগ। এরমধ্য দিয়ে চলে গেছে ঢাকা চট্টগ্রাম রেলপথ। এটি একটি বৃহৎ পরিসর থানা। এর ভিতর রয়েছে ছয়টি রেলপথ। বাংলাদেশের তিনটি প্রধান নদী মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁ এর চুতুর্দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ইংরেজ শাসন থেকেই এ থানাটি বিশাল জনগোষ্ঠি নিয়ে গঠিত। অনুমান করা হয় নীল কর আদায়ের লক্ষ্যে ইংরেজ শাসকরা এ থানার গোড়া পত্তন করেছিল। তাদের প্রতিষ্ঠিত নীলকুঠি আজো ইংরেজ শাসনের স্বাক্ষর বহন করে এ এলাকায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে প্রতিষ্ঠিত এ থানার সাথে জড়িয়ে আছে তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের প্রভাব ও ঐতিহ্যের ইতিহাস।
এই জেলা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। নরসিংদী তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। নরসিংদী জেলার কাপড় কিনে নিয়ে যায় পুরো বাংলাদেশ এর মানুষ এবং অন্যান্য দেশে রপ্তানি করে থাকে।
১৯৮৪ সালে নরসিংদী সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব এবং রায়পুরা এ ০৬ টি উপজেলা এবং নরসিংদী পৌরসভা নিয়ে নরসিংদীকে জেলা ঘোষণা করে সরকার।
নরসিংদী জেলা বাংলাদেশের মধ্যভাগের ঢাকা বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল।
নরসিংদীকে ৩ নম্বর সেক্টরের অধীনে নেয়া হলে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. নূরুজ্জামান। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাসে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৯৭৭ পরবর্তী নারায়ণগঞ্জ মহকুমা থেকে নরসিংদী অঞ্চলকে একক মহকুমায় উন্নিতকরণ করার সুবাদে নরসিংদী পৌর পরিষদকে (ক) শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত করে স্থানীয় সরকারের স্বায়ত্তশাসিত ৩৩ টি মহল্লার সমন্বয়ে ৯ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১০.৩২ বর্গ কিঃ মিঃ আয়তন জুরে নরসিংদী পৌরসভায় রুপান্তর হয়।