বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্বকালে ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক গণপরিষদের নির্বাচনে রায়পুরা থেকে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর রায়পুরার রাজনীতি দুটি প্রধান ধারায় বিভক্ত হয়ে এগিয়ে চলছে। প্রবল বাম ও প্রবল ডানের মাঝখানে জামায়াত-ই-ইসলামী বাংলাদেশ, নেজাম-ই-ইসলাম ও ইসলামী ঐক্য জোট রয়েছে।
বাম নেতৃবৃন্দের মধ্যে কৃষকনেতা ফজলুল হক খোন্দকার (ন্যাপ, মোজাফফর), কমরেড শামছুল হক (সিপিবি) অন্যতম। অন্যদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া, আসাদুল হক খসরু, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এতদ্ঞ্চলের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তন্মধ্যে, নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসন থেকে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বর্তমান জাতীয় সংসদের অন্যতম সদস্য এবং ২০০৮ সালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে, ১৯৭৯ ও ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বিতীয়বার দায়িত্ব পালনকালে কৃষি উপমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯১ সালে আবদুল আলী মৃধা নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আশির দশকের পর রায়পুরার রাজনীতির সাথে গণতন্ত্রী পার্টি ও গণফোরামের ফজলুল হক খোন্দকার, ন্যাপ-ভাসানী ও জাতীয় পার্টির আব্দুল হাই ফরাজী, বিএনপির আলহাজ্ব জামাল আমেদ চৌধুরী, ন্যাপের গোলাম সারোয়ার মাস্টার, সিপিবির আমিনুল হক, গণফোরামের ফরিদা ইয়াসমিন, ইঞ্জিনিয়ার হোসেন ভূঁইয়া খসরু, আঃ বাছেদ চৌধুরী, তাজুল ইসলাম, প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম প্রমূখ সম্পৃক্ত ছিলেন।
অতীতে নেজাম-ই-ইসলামী বাংলাদেশের মৌলবী আব্দুল খালেক, মুসলিম লীগের আব্দুল মতলেব ভূইয়া, জামায়াত-ই-ইসলামীর অধ্যক্ষ মাওঃ সোলায়মান মৃধা, ইসলামী ঐক্যজোটের মৌলানা আমিনুর রহমান রায়পুরা নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন।
এই জেলা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। নরসিংদী তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। নরসিংদী জেলার কাপড় কিনে নিয়ে যায় পুরো বাংলাদেশ এর মানুষ এবং অন্যান্য দেশে রপ্তানি করে থাকে।
১৯৮৪ সালে নরসিংদী সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব এবং রায়পুরা এ ০৬ টি উপজেলা এবং নরসিংদী পৌরসভা নিয়ে নরসিংদীকে জেলা ঘোষণা করে সরকার।
নরসিংদী জেলা বাংলাদেশের মধ্যভাগের ঢাকা বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল।
নরসিংদীকে ৩ নম্বর সেক্টরের অধীনে নেয়া হলে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. নূরুজ্জামান। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাসে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৯৭৭ পরবর্তী নারায়ণগঞ্জ মহকুমা থেকে নরসিংদী অঞ্চলকে একক মহকুমায় উন্নিতকরণ করার সুবাদে নরসিংদী পৌর পরিষদকে (ক) শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত করে স্থানীয় সরকারের স্বায়ত্তশাসিত ৩৩ টি মহল্লার সমন্বয়ে ৯ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১০.৩২ বর্গ কিঃ মিঃ আয়তন জুরে নরসিংদী পৌরসভায় রুপান্তর হয়।