সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন শ্রীহট্ট বিজেতা হযরত শাহ জালালের অন্যতম সঙ্গী ও অনুসারী ছিলেন। তিনি সিলেট অভিযানে প্রেরিত মুসলিম বাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন। ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে সিলেটের ইতিহাসে বহুল আলোচিত তরফ রাজ্য তার মাধ্যমে বিজিত হয়। সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘট উপজেলার মুড়ারবন্দ নামক স্থানে সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের পবিত্র মাজার অবস্থিত। দেশের দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে এ মাজারে। তার জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ সম্পর্কে জীবনী গ্রন্থে আনুমানের ভিত্তিতে ১২৫০ সালে জন্ম হয়েছে এবং শাহ জালালের মৃত্যুর পূর্বে (১৩৪৬ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ পর্যন্ত তার বংশের ১৩০টি পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি কর্তৃক লিখিত "শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত" গ্রন্থ পূর্বাংশ। বইয়ের তথ্যমতে, সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের অধস্তন নবম বংশধর লস্করপুর হাবেলী নিবাসী সৈয়দ হামিদ রাজার পুত্র ছিলেন সৈয়দ শায়েস্তা মিয়া। প্রায় তিনশত বছর পূর্বে খোয়াই নদীর পশ্চিম তীরে সৈয়দ শায়েস্তা মিয়ার নামে একটি হাট বা বাজার স্থাপন করা হয়। প্রথমে এ বাজারটি শায়েস্তা মিয়ার বাজার নামে পরিচিতি পেলেও কালক্রমে বাজার থেকে গঞ্জে পরিণত হয়। বর্তমান শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজারই হচ্ছে মূল শায়েস্তা মিয়ার বাজার। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের মাধ্যমে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন স্থাপন করা হয়। এর ফলে শায়েস্তাগঞ্জ বাজারটি সম্প্রসারিত হয়ে রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন দাউদনগরে (দাউদনগরের জমিদার সৈয়দা ধন বিবি ওয়াকফ এস্টেটের অন্তর্ভুক্ত) আরেকটি বাজারের গোড়াপত্তন হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়, যা দেশের একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা।
২০ নভেম্বর ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে ৪৯২তম উপজেলা হিসেবে শায়েস্তাগঞ্জকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
মৌলভীবাজার এর অর্থনীতির প্রধান ভীত হলো চা শিল্প ও রাবার শিল্প । এ জেলায় প্রচুর পরিমানে চা ও রাবার উৎপাদিত হয় । এ ছাড়াও এ জেলার অর্থনীতিতে এই জেলার পর্যটন শিল্পও বিশেষ ভাবে উল্ল্যেখযোগ্য, তা ছাড়াও এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় শিল্প যা মৌলভীবাজার জেলার অর্থনীতিকে করছে সমৃদ্ধশালী ।
হবিগঞ্জ জেলার আর দশটি সাধারণ মানুষ ভাত মাছ খেলে এখানকার একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী মূলত প্রধান খাবার হিসেবে "ছিকর" নামের একটি খাবার গ্রহণ করে থাকে। অবাক করার বিষয় হল এটি এটেল মাটি দ্বারা নির্মিত একটি খাবার। প্রথমে স্বচ্ছ মিহি এটেল মাটি রোদে শুকোতে হয়।
বাহুবল উপজেলা প্রাকৃতিক বৈচিত্রে ভরপুর উপজেলা। এই উপজেলায় একই সাথে পাহাড়ী টিলা সমতল ভহমি এবং হাওড় অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এই উপজেলায় ৭টি চা-বাগান উপজেলাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করে তোলেছে। তা ছাড়া এইখানে নির্মাণাধীন ৫ তারকা বিশিষ্ট দি প্যালেস আকর্ষনের বিষয় বসত্মত্মুতে পরিণত হয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম গ্যাস ফিল্ড বিবিয়ানা । এটি কে পি আই শ্রেণীর স্থাপনা যা ৪ নং দীঘলবাক ইউনিয়ন ও ৩ নং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জের সৈয়দপুর বাজার হতে মাত্র ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে পাকা সড়কে ধরে গেলেই বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড দেখতে পাওয়া যায় ।
১৯৪৭ সালের ১৩ই আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বদিন পর্যন্ত সিলেট আসামের একটি জেলা হিসেবে গণ্য ছিল। অর্থাৎ এই সময়ে নবীগঞ্জ আসাম প্রদেশের একটি জেলা হিসেবে সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল।