The Ballpen
শিবগঞ্জ উপজেলায় নদ-নদী - theballpen

শিবগঞ্জ উপজেলায় নদ-নদী

8th Dec 2022 | বগুড়া জেলা |

রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাশে দিয়ে বেশ কয়েকটি নদ-নদী বয়ে গেছে।

 

উপজেলাটি মূলত করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত হলেও আরও বেশ কিছু নদ-নদীর শাখা-প্রশাখার সাথে মিলিত হয়েছে।

১। করতোয়াঃ

 হিমালয় পর্বতের পাদদেশে নেপালের পর্বতমালা হতে করতোয়ার উৎপত্তি। অতঃপর গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ অতিক্রম করে এ নদীকে অবশ্য ব্রহ্মপুত্রের উপনদী বলা হয়। বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার ময়দানহাটা ইউনিয়নস্থ পলাশী মৌজার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে কালাই-শিবগঞ্জ থানা সীমানা বরাবর প্রায় ২ মাইল প্রবাহিত হয়ে কচুয়া মৌজার পশ্চিম দিকে একটি বাঁক নিয়ে গোটিলা, উত্তর কৃষ্ণপুর, ছান্দার, কিচক ইউনিয়নস্থ পাতাইর মৌজায় পৌঁছে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। ১টি শাখা পাতাইর এ বাঁক নিয়ে উত্তর দিকে কিছুদূর অগ্রসর হয়ে মাদারগাছি পার হয়ে সোজা মাতিয়ানে পড়ে। ২য় শাখাটি সোজা দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে মাতিয়ান, গোপীনাথপুর, আটমুল ইউনিয়নের চককানু; শিবগঞ্জ ইউনিয়নের চক গোপাল, বিহার ইউনিয়নের নাতমরিচায় এসে এটি ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১টি শাখা বগুড়া-গাইবান্ধা সড়ক অতিক্রম পূর্বক অাঁকাবাঁকা পথে অগ্রসর হয়ে যথাক্রমে রায়নগর ইউনিয়নের তেখড়িয়া, আচলাইতে এসে আবার দ্বিধাবিভক্ত হয় যার প্রথমটি মোকামতলা ইউনিয়নের ভাগকোলা, আচলাই, সারাজী পার আচলাই, মুরদাপুর দিয়ে গাইবান্ধা বগুড়া সড়ক অতিক্রম পূর্বক সোনাতলা থানায় প্রবেশ করে, আর দ্বিতীয়টি আচলাই, পার-আচলাই আলোকদিয়ার, রায়নগর ইউনিয়নের করতিকোলা, চান্দিজান, অনন্তবালা, আবার বগুড়া-গাইবান্ধা সড়ক অতিক্রম পূর্বক নগর কান্দিতে ৩/৪টি বাঁক নিয়ে বগুড়া সদরে প্রবেশ করে। এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, প্রথম বিভক্তির ২য় শাখাটি সোজা দক্ষিণে বিহার ইউনিয়নস্থ ডাহিলা, ভাসুবিহার হয়ে নাগর নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে।করতোয়া নদীটি বগুড়া সদর থানার গোকুল ইউনিয়নস্থ পার দক্ষিণ ভাগ, ধাওয়া কোলা, বাঘাপাড়া, ঠেংগামারা, নিশিন্দারা ইউনিয়নের বারবাকপুর, ফুলবাড়ী, বগুড়া পৌরসভাস্থ চেলুপাড়া, সাবগ্রাম ইউনিয়নের নাটাইপাড়া, ভাতকান্দি, সুলতানগঞ্জ ইউনিয়নের মালতীনগর, চক লোকমান, লতিফপুর, বেতগাড়ী, সুজাবাদ, খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের ডুরালিয়া, খালিশাকান্দি, চুপিনগর ইউনিয়নের ছবিনগর, ত্রিকুসতা, আড়িয়া ইউনিয়নের আড়িয়া, জামালপুর হয়ে শেরপুর থানার গাড়িদহ ইউনিয়নস্থ কানুপুর মৌজায় প্রবেশ করে এবং আঁকাবাঁকা পথে রামনগর, বাংগারা, জোয়ানপুর, হাজিপুর, শেরপুর পৌরসভার রনবীরবালা, মির্জাপুর ইউনিয়নের গেরুসা, কৃষ্ণপুর, মদনপুর, কাশিয়াবালা হয়ে বিনোদপুরে হলহলিয়ার সঙ্গে মিশে যায় এবং মূল শাখাটি বাঁক নিয়ে ছাতরা, ছাতরা হারাজীতে এসে একটি পরিত্যক্ত পথ তৈরি করে। অর্থাৎ অশ্বখুরাকৃতি ধরনের একটি ভূমিরূপ সৃষ্টি করে নিম্নদিকে অগ্রসর হতে থাকে যা গারো, হলদিবাড়ি, দড়িহাসড়া, সদর হাসড়া, ঘোগা, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া সড়ক ছেদ পূর্বক গড়াই মৌজার পশ্চিম হয়ে মরা করতোয় নামে বড়াইদহ হয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানায় প্রবেশ করেছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০/৫৫ মাইল এবং এর তীরে দাড়িদহ, বগুড়া, শেরপুর, মির্জারপুর, ঘোগা ইত্যাদি সুপরিচিত জনপদ অবস্থিত। 

২। গাংনাইঃ

শিবগঞ্জ থানার উত্তর পশ্চিমস্থ মৌজা ময়দানহাটা ইউনিয়নের পলাশী থেকে বেরিয়ে জয়পুরহাটের কালাই থানা-শিবগঞ্জ থানা সীমানা বরাবর মাইল তিনেক অগ্রসর হয়ে গোতিলা নামক স্থানে পূর্ব দিকে ২/৩ টি বাঁক নিয়ে উত্তর কৃষ্ণপুর, চান্দার হয়ে কিচক ইউনিয়নের পাতৈর, জয়পুরহাট কিচক রাস্তার মোড় নিয়ে সোজা গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চককানু, শিবগঞ্জ ইউনিয়নের চক গোপাল, বিহার ইউনিয়নের নাতমরিচা, বানাইলের নিকট করতোয়ার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ইহার দৈর্ঘ্য ১০/১২ মাইল। এর তীরে কিচক, বিহার ইত্যাদি জনপদ অবস্থিত। এ নদীতে সব ঋতুতে পানি থাকে না। 

৩। নাগর

করতোয়ার শাখা নদী নাগর বগুড়া জেলার অন্যতম নদী। এটি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার আটমূল ইউনিয়নস্থ জগদীশপুরের নিকট করতোয়া থেকে বের হয়ে প্রায় ১০ মাইল বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলা সীমানা বরাবর প্রবাহিত হয়ে দুপচাঁচিয়া থানায় প্রবেশ করে। তারপর দুপচাঁচিয়া থানার চামরুল ইউনিয়নস্থ আমলপুরের ১.৫ মাইল পূর্ব দিয়ে মাসিমপুর, চামরুল, মোস্তফাপুর, পোড়াপাড়া, আটগতি, দুপচাঁচিয়া ইউনিয়নস্থ খালাস ধাপ, সঞ্চয়পুর, আলোহালী, তালোড়া ইউনিয়নের তালপাড়া, তালোড়া রেল স্টেশনের পূর্ব পার্শ্ব দিয়ে কিছুদুর অতিক্রমপূর্বক ধাপঘোগা খালী অর্থাৎ পরানপুর, চাপাপুর, গালিয়া, দমদমার নিকট সিংড়া থানায় প্রবেশ করে সিংড়া ব্রীজের কাছে আত্রাই নদীতে পড়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৫ মাইল। নদীটি খুবই সর্পিল প্রকৃতির এবং বর্ষাকলে বেশ পানি থাকে। নদীটি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানা, জয়পুরহাট জেলার কালাই ও ক্ষেতলাল থানা এবং বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া, শেরপুর, আদমদীঘি, কাহালু ও নন্দীগ্রাম থানা সীমানা বরাবর প্রবাহিত। তাই এ নদীটিকে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান এবং জেলা থানা সীমান নির্ণয়কারী নদী হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। 

৪। বাঙ্গালী নদীঃ 

বগুড়া জেলা দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর মধ্যে বাঙ্গালী সম্ভবত সবচেয়ে দীর্ঘ এবং করতোয়া ও আত্রাই নদীর পূর্ব পার্শ্বে এর অবস্থান। এটি নীলফামারী জেলার কতিপয় ক্ষুদ্র প্রকৃতির খাল/জলাশয় থেকে বের হয়ে সৈয়দপুর থানার নিম্নভূমি অতিক্রম করে সাধারণ নদীখাতরূপে রংপুর জেলার পূর্ব দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দপুর থানার কাটাখালী স্রোতধারাটি বাঙ্গালী নামে দক্ষিণ পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকে। গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানা থেকে দুটি জল স্রোতধারা বগুড়া জেলার সোনাতলা থানাস্থ বিসুর পাড়া ও বিশ্বনাথপুর মৌজাদ্বয় দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে যথাক্রমে কামারপাড়া, রংবার পাড়া, নামাজখালি, শিকারপাড়া পর্যন্ত এসে ২ ভাগে বিভক্ত হয় এবং একটি শাখা পশ্চিম দিকের শিকারপাড়া, হলদিয়াবাগ মৌজা ঘুরে পুনরায় মূল ধারার সংগে মিশে যায় এবং মূল শাখাটি নামাজখালি অতিক্রমপূর্বক সারিয়াকান্দি থানাস্থ সাতবেকী ঘুরে আবার সোনাতলা থানার হলদিয়াবাগে মিলিত হয়ে মিলিত ধারা পুনরায় সারিয়াকান্দি থানার শ্যামপুর হয়ে আবার সোনাতলা থানার সারজানপাড়া ও বয়রা হয়ে পুনরায় সারিয়াকান্দি থানার খামারবালালি, বারুরবাড়ি ও নারচি পর্যন্ত অগ্রসর হয়। এখানে ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে ১টি শাখা পশ্চিমে ফুলবাড়ি হয়ে গাবতলী থানার দুর্গাহাটা ইউনিয়নস্থ দুর্গাহাটা সিলন্দাবাড়ি এবং ২য়টি ফুলবাড়ি মৌজার পূর্ব প্রান্ত দিয়ে গাবতলী থানার বালিয়াদিঘি ইউনিয়নের বালিয়াদিঘি, কালাইহাটা এবং ৩য় বা মূল শাখাটি দক্ষিণে ধুনট থানার গোসাইবাড়ি, পাইকপাড়া, ছাগলধারা, দেবডাঙা, বড়াইডান্ডি, ডোমকান্দি, দক্ষিণ বাশহাটা, ভেলাবাড়ি হয়ে আবার সারিয়াকান্দি থানার দক্ষিণে জোড়গাছা হয়ে ধুনট থানার দুই দিক দিয়ে প্রবেশ করে। ১টি শাখা নিমগাছি ইউনিয়স্থ ধামাচামা মৌজা হয়ে এক বাঁক নিয়ে মাঝমাড়ি, শিয়ালি, চিকাশি ইউনিয়নস্থ চিকাশী, পারলক্ষীপুর, কালেরপাড়া ইউনিয়নের কদাই, লক্ষীপুর, আনারপুর, ধুনট ইউনিয়নের ধুনট, হয়ে কাজীপুর থানায় প্রবেশ করে। অপরদিকে ২য় শাখাটি ধুনট থানার নিমগাছি ইউনিয়নস্থ ধামগাছার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দুটি বড় ধরনের বাঁক নেয় এবং কিছুদূর অগ্রসর হয়ে একটি অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ সৃষ্টি করে এবং নিমগাছি অতিক্রম করে বগুড়া থানায় প্রবেশ করে এবং এলাঙ্গী ইউনিয়নের বিলচাপরি হয়ে শেরপুর থানার খামারকান্দি ইউনিয়নের ঘোরদৌড়ে ঢুকে বেশ অাঁকাবাঁকা পথে অগ্রসর হয়ে খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর তেবাড়িয়া, ধুনট, শেরপুর সড়ক ছেদ পূর্বক বথুয়াবাড়িতে হলহলিয়ার সঙ্গে মিশে যায়। এটি একটি আঁকাবাঁকা প্রকৃতির নদী, বর্ষাকালে পানিতে পরিপূর্ণ থাকে এবং তখন নৌকা অনায়াসে চলাফেরা করে থাকে। এ নদী পথ পরিক্রমা প্রায় ৫০/৬০ মাইল এবং এর তীরে অনেক প্রাচীন জনপদ গড়ে উঠেছে। 





Related

বগুড়া জেলা কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

বগুড়া জেলা ১৮২১  সালে জেলা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।



Related

বগুড়া জেলার ভৌগোলিক সীমানা

৮৮.৫০ ডিগ্রী পূর্ব থেকে ৮৮.৯৫ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এবং ২৪.৩২ ডিগ্রী উত্তর থেকে ২৫.০৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশে বগুড়া সদর উপজেলা অবস্থিত।

বগুড়ার উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট, উত্তর পশ্চিমে জয়পুরহাটের অংশবিশেষ,পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে নওগাঁ, দক্ষিণে নাটোর ও সিরাজগঞ্জের অংশবিশেষ এবং দক্ষিণ পূর্বে সিরাজগঞ্জের অবশিষ্ট অংশ বিদ্যমান। বগুড়ার পূর্বে জামালপুর থাকলেও এর স্থলভাগ সংযুক্তভাবে অবস্থিত নয়। 

বগুড়া ভৌগোলিকভাবে ভূমিকম্পের বিপজ্জনক বলয়ে অবস্থিত। তাছাড়া বগুড়া জেলা বরেন্দ্রভূমির অংশবিশেষ যা ধূসর ও লাল বর্ণের মাটির পরিচিতির জন্য উল্লেখ্য।



Related

বগুড়া জেলার জনসংখ্যা কত?

বগুড়া জেলার জনসংখ্যা মোট: ৩৭,৩৪,৩০০ জন
পুরুষ:৪৯.৬০%
মহিলা:৫০.৪০%|উত্তরবঙ্গের ১৬ টি জেলার মধ্য জনসংখ্যায় বৃহত্তম জেলা হচ্ছে বগুড়া। এবং সারা বাংলাদেশে ষষ্ঠ বৃহত্তম জেলা।



Related

বগুড়া জেলার ইতিহাস

খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতকে বগুড়া মৌর্য শাসনাধীনে ছিল। মৌর্য এর পরে এ অঞ্চলে চলে আসে গুপ্তযুগ । এরপর শশাংক, হর্ষবর্ধন, যশোবর্ধন পাল, মদন ও সেনরাজ বংশ ।

সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবনের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন বগড়া ১,২৭৯ থেকে ১,২৮২ পর্যন্ত এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন। তার নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছিল বগড়া (English:Bogra)। ইংরেজি উচ্চারন 'বগড়া' হলেও বাংলায় কালের বিবতর্নে নামটি পরিবর্তিত হয়ে 'বগুড়া' শব্দে পরিচিতি পেয়েছে। ২ এপ্রিল ২০১৮ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে বগুড়ার ইংরেজি নাম Bogura করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।



Related

বগুড়া জেলার সংসদীয় আসন কয়টি কী কী?

বগুড়া জেলার সংসদীয় আসন :৭টি 

  • বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা)
  • বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ)
  • বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি)
  • বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম)
  • বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট)
  • বগুড়া-৬ (বগুড়া সদর)
  • বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর)