উপজেলার নাম করণঃ
কথিত আছে যে, শিবগঞ্জ উপজেলা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা । পূর্বে এ এলাকায় হিন্দুদের পুজাপার্বনে অসংখ্য শিবমন্দির ছিল। শিবমন্দিরকে কেন্দ্র করে বন্দর-গঞ্জ গড়ে উঠে। এরই ফলশ্রূতিতে এ উপজেলার নাম শিবগঞ্জ করা হয়েছে ।
উপজেলার ভৌগলিক অবস্থানঃ
শিবগঞ্জ উপজেলাটি বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে বৃহৎ উপজেলা । আয়তন ৩১৫ কিমিঃ । বগুড়া জেলা শহর হতে ১৯ কিমিঃ উত্তরে গাংনই নদীর তীরে অবস্থিত । এ উপজেলার উত্তরে গাইবান্ধা জেলা, ,দক্ষিনে বগুড়া সদর কাহালূ ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা ,পূর্বে সোনাতলা ও গাবতলি উপজেলা এবং পশ্চিমে কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলা ।
বর্তমান উপজেলার ইতিহাসঃ
বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার যে ইতিহাস পাওয়া যায় সেখানে বগুড়ার অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ও তাৎপর্যবহ । আড়াই হাজার বছরের পুরোনো এই সভ্যতার নাম ছিল পুন্ড্রবর্ধন। বর্তমানে বৃহত্তর রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপু, রংপুর নিয়ে গঠিত প্রাচীন পুন্ড্র জনপদের রাজধানী ছিল পুন্ড্রনগর যার বর্তমান নাম মহাস্থানগড়। মৌর্য ও গুপ্ত যুগেও পুন্ড্রনগর ছিল মৌর্য ও গুপ্ত অধিকৃত বাংলার রাজধানী । খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে খ্রিস্টিয় ১৫শ শতাব্দির মধ্যে এ নগর এক সমৃদ্ধশালী জনপদরূপে গড়ে উঠে। বেশ কয়েক শতাব্দি জুড়ে এই স্থান মৌর্য ,গুপ্ত, পাল, সেন এবং অন্যান্য হিন্দু সামন্ত রাজাদের প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল । পরবর্তীতে এ নগরি থেকেই সর্ব প্রথম এ অঞ্চলে ইসলামের প্রচার শুরূ হয় । দ্বাদশ শতাব্দির প্রথমার্ধে হযরত শাহসুলতান বলখি মাহিসওয়ার ( রহঃ ) পুন্ড্রবর্ধনের রাজা পরশুরামকে পরাস্ত করে এ অঞ্চলে ইসলামের নিশান স্থাপন করেন ।
৮৮.৫০ ডিগ্রী পূর্ব থেকে ৮৮.৯৫ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এবং ২৪.৩২ ডিগ্রী উত্তর থেকে ২৫.০৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশে বগুড়া সদর উপজেলা অবস্থিত।
বগুড়ার উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট, উত্তর পশ্চিমে জয়পুরহাটের অংশবিশেষ,পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে নওগাঁ, দক্ষিণে নাটোর ও সিরাজগঞ্জের অংশবিশেষ এবং দক্ষিণ পূর্বে সিরাজগঞ্জের অবশিষ্ট অংশ বিদ্যমান। বগুড়ার পূর্বে জামালপুর থাকলেও এর স্থলভাগ সংযুক্তভাবে অবস্থিত নয়।
বগুড়া ভৌগোলিকভাবে ভূমিকম্পের বিপজ্জনক বলয়ে অবস্থিত। তাছাড়া বগুড়া জেলা বরেন্দ্রভূমির অংশবিশেষ যা ধূসর ও লাল বর্ণের মাটির পরিচিতির জন্য উল্লেখ্য।
বগুড়া জেলার জনসংখ্যা মোট: ৩৭,৩৪,৩০০ জন
পুরুষ:৪৯.৬০%
মহিলা:৫০.৪০%|উত্তরবঙ্গের ১৬ টি জেলার মধ্য জনসংখ্যায় বৃহত্তম জেলা হচ্ছে বগুড়া। এবং সারা বাংলাদেশে ষষ্ঠ বৃহত্তম জেলা।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতকে বগুড়া মৌর্য শাসনাধীনে ছিল। মৌর্য এর পরে এ অঞ্চলে চলে আসে গুপ্তযুগ । এরপর শশাংক, হর্ষবর্ধন, যশোবর্ধন পাল, মদন ও সেনরাজ বংশ ।
সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবনের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন বগড়া ১,২৭৯ থেকে ১,২৮২ পর্যন্ত এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন। তার নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছিল বগড়া (English:Bogra)। ইংরেজি উচ্চারন 'বগড়া' হলেও বাংলায় কালের বিবতর্নে নামটি পরিবর্তিত হয়ে 'বগুড়া' শব্দে পরিচিতি পেয়েছে। ২ এপ্রিল ২০১৮ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে বগুড়ার ইংরেজি নাম Bogura করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বগুড়া জেলার সংসদীয় আসন :৭টি