ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসন আমলে ১৮৪৪ খৃস্টাব্দের ১০ অক্টোবর এক সরকারী আদেশ জারী করা হয় যে,‘‘এখন থেকে সরকারী অফিসে ইংরেজী ভাষায় অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ করা হবে।’’ এর আগে এই উপমহাদেশের রাষ্ট্রভাষা ছিল ফারসী ।এ ঐতিহাসিক সত্যের নিরিখে দেখা যায় যে,পলাশী যুদ্ধের পর দীর্ঘ ৮৭বছর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্তাব্যক্তি স্যার জেমস ওয়েস্টল্যান্ড আটাশাটি খনিত পুকুর সমৃদ্ধ এ এলাকাটিকে তালাব এরিয়া (তালাব এলাকা) আখ্যা দেন। তালাব শব্দের অর্থ পুকুর। পরবর্তীকালে ভূমি জরিপ বিভাগের কর্মকর্তাদের অসাবধানতায় ফরাসী শব্দ তালাব থেকে ‘ব’ অক্ষরটি বিচ্যুত হয়ে তা ‘তালা’য় রুপান্তরিত হয়।
অপরদিকে একটি অসমর্থিত জনসমর্থণের উপর ভিত্তি করে ১৯৯১ সালের আদমশুমারীর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, কপোতাক্ষ নদে কোন এক সময় এক মৎস্যজীবীর জালে একটি ভারী লোহার সিন্দুক উঠে আসে। ঐ সিন্দুকে একটি বিস্ময়কর তালা লাগানো ছিল। সেই তালাটিকে বর্তমান থানা সদরের নদীর তীরে রাখা হয়। এই তালা থেকে তালা'র উৎপত্তি। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, তালা বাজারে থানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৩ সালে। এর পূর্বে থানা সদর ছিল মাগুরা ইউনিয়নে। ১৯১৩ সালে থানা তালায় স্থানান্তরিত হয়। কাজেই স্যার জেমস ওয়েস্টল্যান্ড এর দেয়া নামই ঐতিহাসিক সত্য প্রকাশ করে এবং এটাই যুক্তিসঙ্গত ।
০২. স্থাপনকাল :১৯১৩ সাল । ২৪-০৩-১৯৮৩ মান উন্নীত থানা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত।
০৩. সীমানা :উত্তরে যশোর জেলার কেশবপুর ও সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেল পূর্বে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা উপজেলা, দক্ষিণে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলা ও পশ্চিমে সাতক্ষীরা সদর উপজেল অবস্থিত ।
০৪. আয়তন :৩৪৪.১৫ বর্গ কিলোমিটার ।
০৫. ভৌগলিক অবস্থান :(অক্ষাংশে ও দ্রাঘিমাংশে) তালা উপজেলার ও ৮৯-২র্০র্ অক্ষাংশে এবং ২২-৩র্র্র্২র্ ও ২২-৫র্০র্ উত্তর দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত ।
১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে ৭টি থানা নিয়ে সাতক্ষীরা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৮৬৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার অধীনে এই মহকুমার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে সাতক্ষীরা খুলনা জেলার অর্ন্তভূক্ত একটি মহকুমা হিসাবে স্থান লাভ করে।
সাতক্ষীরা জেলা চিংড়ি ও সন্দেশের জন্য বিখ্যাত। সাতক্ষীর জেলাটি থেকে দেশের রপ্তানীকৃত চিংড়ির প্রায় ৭০ভাগ হয়ে থাকে।
প্রতিটি সেক্টরে একজন করে অধিনায়ক নিযুক্ত করে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল । সাতক্ষীরা অঞ্চল ছিল অষ্টম ওনবম সেক্টরের অধীন ।
এক অনির্বচনীয় নান্দনিক অনুভবের প্রাচীন জনপদ সাতক্ষীরা একদা রাজা প্রতাপাদিত্যের যশোহর রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। বারোভূঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী এ জেলার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর এলাকায়। বাংলাদেশের মানচিত্রে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান। এ জনবসতি প্রাচীনকালে খ্যাত ছিল বুড়ন দ্বীপ নামে।
সাতক্ষীরা জেলা বাংলাদেশের একটি জেলা। এটি খুলনা বিভাগ এর অন্তর্গত। সাতক্ষীরা বাংলাদেশের নৈঋত কোণে অবস্থিত, দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা; যার পূর্বে খুলনা, উত্তরে যশোর, পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা এবং দক্ষিণে মায়াময় সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর। এই জেলাটি আশাশুনি, কলারোয়া, কালিগঞ্জ, তালা, দেবহাটা, শ্যামনগর এবং সাতক্ষীরা সদর - এই সাতটি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত।