বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগে মুসলমানদের নবজাগরণে ইসলামী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কাব্য রচনায় আত্মনিয়ােগ করেন সৈয়দ ইসমাইল হােসেন সিরাজী। তার রচিত মুসলিম জাগরণমূলক কাব্য ‘অনল প্রবাহ (১৯০০)। 'যা চলে গেছে তার জন্য শােক বৃথা বরং জাতির হৃতগৌরব উদ্ধারের প্রচেষ্টাই মুখ্য’- এই বাণীতে মুসলমানদের দুরবস্থা ও অধঃপতন ব্যক্ত করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও রােষ প্রকাশ করা হয়েছে এ কাব্যটিতে। এ কাব্যে তিনি দেশের যুব সমাজকে লক্ষ্য করে আহ্বান জানান—
অনল প্রবাহ’ কাব্যগ্রন্থে কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভারত ভিক্ষা’, ভারত বিলাপ’ ইত্যাদি কবিতার সুস্পষ্ট প্রভাব আছে।
প্রথম সংস্করণে কবিতা ছিল নয়টি। যথা : অনল-প্রবাহ, তুর্যধ্বনি, মূচ্ছনা, বীর- পূজা, অভিভাষণ : ছাত্রগণের প্রতি, মরক্কো-সঙ্কটে, আমীর আগমনে, আমীর-অভ্যর্থনা, দীপনা।
১৩১৫ বঙ্গাব্দে (১৯০৮) পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ বের হয়। অনল প্রবাহ’ কাব্যের অগ্নিবাণী ভাবের তীব্রতা ও ভাষার ওজস্বিতাগুণে সমাজের সর্বত্র অভূতপূর্ব আলােড়ন সৃষ্টি করে। কাব্যটি যে অনেক বেশি আবেদনশীল হয়েছিল তা উপলব্ধি করা যায় ইংরেজ সরকার কর্তৃক এর বাজেয়াপ্তকরণের (১৯০৯) ঘটনার দ্বারা।
তার বলিষ্ঠ লেখনীর প্রভাবে বাংলাদেশে মুসলমানদের মধ্যে নবজাগরণের সৃষ্টি হয়। ইসমাইল হােসেন সিরাজীর উদাত্ত আহ্বানে বাঙালি মুসলমানের জীবনে সাড়া জেগেছিল।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup