ড. সেলিম আল দীন নাটক রচনায় আঙ্গিক রূপায়ণে ও বিষয় নির্বাচনে নতুনত্ব দেখিয়ে বাংলাদেশের নাট্যসাহিত্যে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছেন। কিত্তনখােলা’ (১৯৮৬) নাটকে ক্রুদ্ধ স্পর্ধিত শােষক চরিত্রের সাথে সহজ সরল নিরন্ন মানুষের দ্বন্দ্বের ইতিহাস চিত্রিত হয়েছে।
সামাজিক শােষণের ভয়াবহতা সত্ত্বেও সংগ্রামী চেতনা নিয়ে বেঁচে থাকে কিত্তনখােলার অবিনাশী মানুষেরা। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় পূজা-উৎসব কেন্দ্রিক অলিখিত বাংলা নাটকের সম্ভাব্য আঙ্গিক রীতিতে রচিত হয়েছে কিত্তনখােলা নাটকের মহাকাব্যিক পট।
সেলিম আল দীন বিশ্বাস করেন যে- হাজার বছরের বাংলা নাটকের আঙ্গিক সাধনাতেই আমাদের জাতীয় নাট্যরীতির প্রকৃত উজ্জীবন সম্ভব। এই বিশ্বাসে স্থিত থেকে সেলিম আল দীন দক্ষিণ বাংলার সগ্রামী মানুষের জীবন-সগ্রামের ছবি এঁকেছেন কিত্তনখােলা নাটকে।
পূর্বাঞ্চলীয় জনপদের প্রাকৃত ও কর্মমুখর ভাষাতেই তিনি রচনা করেছেন কিত্তনখােলা নাটক। যমুনা ও বঙ্গোপসাগরের কূলে কূলে ধ্বংস ও সৃষ্টির যে লীলা-নাটকের যথার্থ আঙ্গিক সেখানেই। রৌদ্রে নুনে ঘামে সে জীবন হয়ে উঠেছে নাট্যবস্তু। দক্ষিণে গজায়মান সমুদ্র। কাকে ভয়? জীবনের এই অভয় মন্ত্র উচ্চারণের জন্যে কিত্তনখােলা নাটকে পৌরাণিক উপন্যাসের সাথে সামাজিক রূপান্তরের প্রক্রিয়াকে অঙ্কিত করেছেন সেলিম আল দীন।
এভাবেই কিত্তনখােলা নাটক হয়ে উঠেছে বাঙালির মহাজীবনের মহানাটক। ইদু, শামছল বয়াতি, হাশেম খান, মােহাদ্দেস, মনাই বাবা, ভাসানী হুজুর, খালেক, সুবল, বনশ্রী, সােনাই প্রভৃতি চরিত্র এ নাটকের ঘটনাপ্রবাহের সাথে সম্পর্কিত।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup