রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেন স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারে মুসলমান মহিলাদের মধ্যে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। কলকাতার সাখাওয়াত মেমােরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা তার প্রধান কীর্তি। নারী মুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ রােকেয়া সাহিত্য চর্চায়ও ব্রত ছিলেন। তার অধিকাংশ রচনাই গদ্য ও সমাজ সংস্কারমূলক।
তার রচিত উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ হচ্ছে মতিচূর, পদ্মরাগ, অবরােধবাসিনী, সুলতানার স্বপ্ন।
‘পদ্মরাগ' (১৯২৪) রােকেয়া সাখাওয়াত হােসেন রচিত উপন্যাসােপম গদ্য-আখ্যায়িকা। কেননা আজকাল উপন্যাস বলতে আমরা সাধারণভাবে যা বুঝি এটি সে শ্রেণির উপন্যাস নয়। রােকেয়া সাখাওয়াত নিজের ব্যক্তিগত জীবনে যে জিনিসটিকে সবচেয়ে বড় করে দেখেছেন ‘পদ্মরাগ'-এর মধ্যে দিয়ে তা তিনি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তােলার চেষ্টা করেছেন।
একটি চমৎকার গল্প আছে এ গ্রন্থের অবতারণা অংশে। এক মুসলিম ধর্মপিপাসু দরবেশের কাছে এলাে শিক্ষা নিতে। দরবেশ তাকে নিজের হিন্দু গুরুর কাছে নিয়ে গেলেন। সেই হিন্দুগুরু আবার তাদের নিয়ে গেলেন নিজের মুসলিম গুরুর কাছে। এভাবে বােঝানাে হলাে প্রকৃত শিক্ষার মধ্যে সম্প্রদায়জ্ঞান থাকে না। জ্ঞানের আলােতে কূপমণ্ডুকতা দূর করতে হয়।
ঈশান কম্পাউন্ডারের ভাষায় এবং তারিণী-ভবন’ অনাথাশ্রম বা বিদ্যাশ্রমকে কেন্দ্র করে ‘পদ্মরাগে বলা হয়েছে যে, হিন্দু-মুসলিম-ব্রাহ্ম-খ্রিস্টান একই মাতৃগর্ভজাত। উপন্যাসের সিদ্দিকা নারীর স্বনির্ভরতা ও উন্নতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নারী সমাজ সম্পর্কে সচেতন এমন নারী একালেও বিরল।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup