‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ (১৯৭৬) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপকরণ নিয়ে রচিত সৈয়দ শামসুল হকের সর্বাধিক সার্থক ও মঞ্চসফল কাব্যনাট্য।
তিনি স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে সাহিত্যসাধনায় আত্মনিয়ােগ করলেও নাটক রচনায় মনােনিবেশ করেছেন স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তী পর্যায়ে। সে কারণে স্বাভাবিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ তাঁর সাহিত্যের উপজীব্য হয়েছে।
এ নাটকের বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিককার ঘটনাবলি। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় আসন্ন।
গ্রামে প্রবেশ করছে মুক্তিবাহিনী। তাদেরই পায়ের আওয়াজ যেন শােনা যাচ্ছে। এ সংবাদে গাঁয়ের মাতবর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। সে ছিল হানাদার বাহিনীর দালাল। সে দালালি করে শত্রুবাহিনীর সহযােগিতা করেছে। এমনকি পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার হাতে নিজের কন্যাকে তুলে দিয়েছিল। গ্রামবাসী মাতবরের কাছে সব জানতে চায়। মাতবরের কন্যা পিতার সামনেই আত্মহত্যা করে। সেই সঙ্গে মাতবরকে হত্যা করে মুক্তিযােদ্ধারা।
বিষয়বস্তুর দিক থেকে মুক্তিযুদ্ধকালীন অবস্থার প্রতিফলন হওয়াতে তৎকালীন বাস্তব চিত্র হিসেবে তা বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী। নাট্যকারের বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে ঘটনা বর্ণনা ও চরিত্রচিত্রণে বিশেষ দক্ষতার প্রকাশ ঘটেছে।
পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ কাব্যনাট্যে উপভাষার প্রয়ােগে নাট্যকার বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। এখানে উপভাষার প্রয়ােগ হয়েছে বােধগম্য ও সরল চলিতরূপে। মুখের ভাষাকে পরিশীলিত করে কাব্য ভাবনার উপযুক্ত করে তােলা হয়েছে-
সর্বোপরি কাব্যনাটক হিসেবে নাট্যভাবনা তার নিজের না হলেও এদেশীয় পটভূমি সমাজ মানুষের জীবন নিয়ে তার এ নাটক উৎকৃষ্ট কাব্যনাটক হতে পেরেছে বলা চলে।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup