বাংলা কাব্যের পালাবদলের প্রধান সূত্রকার বিহারীলাল চক্রবর্তী। তিনিই বাংলা সাহিত্যে প্রথম গীতিকবিতার সার্থক প্রয়ােগ ঘটান। তার করস্পর্শে বাংলা কাব্য সাহিত্যিকতা থেকে আন্তরিকতায়, তন্ময়তা থেকে মৃন্ময়তায়, আখ্যায়িকা কাব্য হতে গীতিকবিতায় বাঁক নেয়। তার একটি উল্লেখযােগ্য গীতিকাব্য বঙ্গসুন্দরী’ (১৮৭০)।
প্রকৃতি প্রেমিক কবি জড় প্রকৃতিকে প্রাণময় রূপ দিয়েছেন তার নিসর্গ সন্দর্শনে। বঙ্গসুন্দরী'তে তিনি প্রকৃতি ও নারীকে একাকার করে দেখেছেন। তার মতে, বঙ্গের প্রকৃতি যেমন সুন্দর, তেমনি বঙ্গের নারীও। প্রাত্যহিক জীবনে মাতা-জায়া-কন্যা-ভগিনীরূপে আসীন যে নারী, তাকে তিনি সীমা স্বর্গের ইন্দ্রাণী করে দেখেছেন। নারীকে কখনাে বা তিনি মিস্টিক ও রােমান্টিক বাতাবরণে স্থাপন করেছেন।
বঙ্গসুন্দরী’ কাব্যটি দশ সর্গে রচিত। প্রতিটি সর্গেই কবি প্রকৃতি ও নারীকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কাব্যের প্রথম সর্গ ‘উপহার’। এ সর্গে কবিচিত্ত অস্থির ও অতৃপ্ত। প্রতিবেশ-পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতার সাথে কবি যেন নিজেকে মেলাতে পারছেন না। তাই কবি বলে ওঠেন।
দ্বিতীয় সর্গ ‘নারীবন্দনা', তৃতীয় সর্গ সুরবালা’, চতুর্থ সর্গ ‘ চিরপরাধিনী', পঞ্চম সর্গ করুণা সুন্দরী', ষষ্ঠ সর্গ ‘বিষাদিনী’, সপ্তমসর্গ প্রিয়সখী’, অষ্টম সর্গ ‘বিরহিণী’, নবম সর্গ প্রিয়তমা’ ও দশম সর্গ অভাগিনী'। কবি সহজ সরল দৈনন্দিন শব্দ প্রয়ােগে বাংলার নারীর অপরূপা মাধুর্য বর্ণনা করেছেন।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup