বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্র। তার উল্লেখযােগ্য সধবার একাদশী’ (১৮৬৬) প্রহসনে তৎকালীন ইয়ংবেঙ্গল দলের উচ্ছলতা ও অনাচারের চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে। এছাড়াও এতে সে যুগের কলকাতায় উচ্চশিক্ষিত এবং অর্ধশিক্ষিত যুবসম্প্রদায়ের পানাসক্তি, লাম্পট্য, পরস্ত্রী হরণ প্রভৃতি চরিত্রভ্রষ্টতার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে।
মদ্যপান ও তৎসংশ্লিষ্ট নৈতিক অধঃপতন কিভাবে সমাজকে বিধ্বস্ত করে তা দেখানাের জন্যই নাট্যকার নাটক শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত এ উদ্দেশ্যকে অতিক্রম করে জীবন রহস্যের গভীরে প্রবেশ করেছেন। তাই সহানুভূতির অশ্রুজলে, বস্তুনিষ্ঠ গভীরতায় শিল্পী সমাজদেহের মর্মস্থল পর্যন্ত তার সন্ধানী দৃষ্টির সাহায্যে আলােকিত করেছেন।
সধবার একাদশী’ নাটকের নায়ক নিমচাদের জীবনে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও ব্যর্থতা, অধঃপতন বােধ ও আত্মগ্লানি নাটকটিতে এক গভীর মাত্রা যােজনা করেছে। নিমচাদ যেন তকালীন উচ্ছঃখল যুবসমাজের শ্রেণি প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।
চরিত্রসৃষ্টি, সংলাপ, ঘটনাপ্রবাহ, কৌতুক সবকিছুর মিলিতরূপে সধবার একাদশী বাংলা সাহিত্যের একটি স্মরণীয় রচনা।
প্রহসনের নায়ক নিমচাঁদ ছাড়াও উল্লেখযােগ্য চরিত্র হলাে- কেনারাম, সৌদামিনী, জীবনচন্দ্র, অটলবিহারী, গিন্নী প্রমুখ। তার এ প্রহসনে সৃষ্ট চরিত্রের মধ্যে একটা স্বাভাবিকতাও রয়েছে।
তিনি ভাষা ব্যবহারের দিক থেকেও বিভিন্ন শ্রেণির লােকের বৈশিষ্ট্য রক্ষা করেছেন। প্রহসনটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের একেই কি বলে সভ্যতা’ অনুসরণে রচিত হলেও তা গুরুত্বপূর্ণ রচনা।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup