সেলিনা হােসেন বাংলাদেশের সমকালীন সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট আসন অলঙ্কৃত করে আছেন। কথাসাহিত্যিক হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত। তার হাঙ্গর নদী গ্রেনেড (১৯৭৬) উপন্যাসের নামকরণ এবং বিষয়বস্তুতে প্রতীকী ব্যঞ্জনার প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। হাঙ্গর আক্রমণকারী মিলিটারি, নদী-বুড়ী-তথা বাংলাদেশের নিস্তরঙ্গ জীবন এবং গ্রেনেড মুক্তিযােদ্ধা।
সর্বমােট বিরানব্বই পৃষ্ঠার উপন্যাসটির চুয়াল্লিশ পৃষ্ঠা পর্যন্ত প্রধান চরিত্র বুড়ীর জীবন, তার কৈশাের, যৌবন, বিবাহ, সন্তানহীনতা, সন্তানপ্রাপ্তি, স্বামীর মৃত্যু, সতীনের বড় ছেলের বিয়ে, দাদী হওয়া ইত্যাদি যেন হাজার বছরের বাংলাদেশের নিস্তরাদ এক ঘেয়ে বৈচিত্রহীন শান্তনদীর মত প্রবাহিত জীবনের বর্ণনা রয়েছে।
হাজার বছরের বাংলাদেশের নয় মাস সংক্ষিপ্ত অথচ ব্যতিক্রমী। নয় মাসের প্রথম পর্যায় পাকবাহিনী আক্রমণকারী হাঙ্গর এবং দ্বিতীয় পর্যায় প্রতি আক্রমণকারী মুক্তিযােদ্ধা গ্রেনেড। তাই হাঙ্গর ও গ্রেনেড উপন্যাসটির অর্ধেক জায়গা মাত্র জুড়েছে।
হাজার বছরের নদীমাতৃক বাংলাদেশের হাঙ্গর ও গ্রেনেডের অবস্থান সংক্ষিপ্ত এবং ব্যতিক্রমী। তাই ইচ্ছে করেই হয়ত সেলিনা হােসেন তিন শব্দের নামকরণের যে সমন্বয় সাধন করেছেন তাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে সমান জায়গা করে দেননি। সেলিনা হােসেনের বর্ণনা আন্তরিক, জীবন্ত এবং তীক্ষ। ভাষা সরল বাক্য তীর্যক। সর্বত্র ঔচিত্যবােধের ছাপ বর্তমান।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup