মূলভাব : অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার বিধান চিরাচরিত। সকল শাস্তিই যন্ত্রণাদায়ক। কিন্তু দণ্ডদাতা বিচারক যদি মানবিক দিক থেকে সবকিছু বিবেচনা করেন এবং সমব্যথী হন তবেই সে বিচার হয় সর্বশ্রেষ্ঠ বিচার।
ভাব সম্প্রসারণ : ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠাই বিচারকের একমাত্র ধর্ম। নিরপেক্ষভাবে অপরাধ নির্ণয় করে অপরাধীকে শাস্তিদান করাই বিচারকের কাজ। এই কাজ অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু অপরাধীকে দণ্ডদানের ব্যাপারে বিচারককে সংবেদনশীল হতে হবে, হতে হবে অনুভ‚তিপ্রবণ। তা না হয়ে তিনি যদি অপরাধীকে নির্মমভাবে দণ্ডদান করেন, দণ্ডিতের বেদনায় তাঁর হৃদয়ে যদি করুণার উদ্রেক না হয়, তবে তাঁর দণ্ডদান হয়ে ওঠে প্রবলের অত্যাচার এবং তিনি হয়ে পড়েন বিচারক পদের অযোগ্য। যে দণ্ডিত, যাকে তিনি দণ্ড দান করলেন, সে অবশ্যই কোনো হতভাগ্য পিতামাতার সন্তান। সন্তানের ব্যথা-বেদনায় তারাও ব্যথিত হবেন। তাছাড়া যেকোনো শাস্তিই কষ্টদায়ক। অপরাধীকে সেই কষ্ট ভোগ করতে হয়। বিচারক যদি তার এবং তার স্বজনদের ব্যথা-বেদনার কথা চিন্তা করে ব্যথিত না হন, তাহলে তাঁর শাস্তিদান হবে নিষ্ঠুরতার নামান্তর। কাজেই, দণ্ডিতের প্রতি বিচারককে সমব্যথী হতে হবে। সমব্যথী বিচারকের বিচারই সর্বশ্রেষ্ঠ বিচার এবং তিনি যে শাস্তিদান করেন, তাই সর্বোচ্চ শাস্তি।
মন্তব্য : দণ্ডদাতার মন অপরাধীর জন্য যদি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, তবে তা অপরাধীর হৃদয় এবং বিবেককেও স্পর্শ করবে। সেই সঙ্গে অপরাধী নিজের কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হবে এবং জাগ্রত হবে তার পরিশুদ্ধ বিবেক।