১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রাম শেষে এদিন আমাদের দেশ শত্রুমুক্ত হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তাই ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর আমরা এই ১৬ই ডিসেম্বরে বিজয় লাভ করি। তাই বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মহাসমারোহে এদিনটি উদ্যাপন করে। এদিন বিভিন্ন অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ পতাকা উত্তোলন করেন এবং কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন। সরকারি-বেসরকারি ভবন ও দেশের প্রধান প্রধান সড়ককে জাতীয় পতাকায় সুশোভিত হয়। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে কত ছাত্র, জনতা, কৃষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী মানুষ। বিজয়ের আনন্দের মাঝে তাই জেগে ওঠে তাদের হারানোর বেদনা। মহান বিজয় দিবস শুধু জাতীয় মর্যাদায় অভিষিক্ত একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন নয়, এটি বাঙালির হৃদয় এবং সত্তার গভীরে প্রোথিত একটি অনন্য দিন। বিজয় দিবস স্বাধীনতাকামী বাঙালির পবিত্র চেতনার ধারক। বাঙালির হাজার বছরের সভ্যতা এবং সংস্কৃতির ইতিহাসে দ্যুতিময় এ মহান বিজয় দিবস চিরদিন সমুজ্জ্বলভাবে টিকে থাকবে। প্রতিবছর এ দিবসে আমরা আত্মসচেতন হই, প্রত্যয়ে দৃপ্ত হই, অন্তরে বিশ্বাস স্থাপন করি-রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এ স্বাধীনতাকে আমরা যেকোনো মূল্যে সমুন্নত রাখব। [দি. বো. ১৫]