শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হান কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করে বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনে একটি উজ্জ্বল আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। উপন্যাস রচনায় জহির রায়হান উৎকর্ষপূর্ণ প্রতিভার পরিচয় দিয়ে গেছেন।
আরেক ফাল্গুন’ (১৯৬৯) ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত এক অনবদ্য উপন্যাস। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির মনে যে চেতনার সঞ্চার করেছিল তার বাস্তব আলেখ্য হিসেবে এ উপন্যাসটি বিবেচনার যােগ্য।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে বাঙালি জীবনে যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল তার চমৎকার আলেখ্য এখানে রূপায়িত হয়েছে। সমকালীন রাজনৈতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে উপন্যাসটি রচিত বলে সে আমলের ছবি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
নায়ক মুনিম, আসাদ, রসুল, সালমা চরিত্রের মতাে অন্যান্য চরিত্র ইতিহাস অনুমােদিত।
১৯৫৫ সালে বর্তমান শহিদ মিনারের স্থায়ী ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ হয়ে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত চলমান আন্দোলন, জনতার সম্মিলন, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, তাদের প্রেম-প্রণয় ইত্যাদি উপন্যাসটির মূল বিষয়।
জাতীয় জীবনের ঐ অগ্নিমুখী পরিস্থিতিতে জহির রায়হান আলাে-অন্ধকারের দোদুল্যমানতা থেকে উপন্যাস-অন্তর্গত চরিত্রসমূহকেই কেবল মুক্তিদান করেন নি, জাতির সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতকেও প্রত্যক্ষ করেছেন।
উপন্যাসের শেষে উচ্চারিত সংলাপে সে-সত্যেরই ইঙ্গিত বিদ্যমান :... কবি রসুল চিৎকার করে উঠল, জেলখানা আরাে বাড়ান সাহেব। এত ছােট জেলখানায় হবে না।
আর একজন বলল। এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হব। দৃষ্টিভঙ্গির নতুনত্ব, বর্ণনার আকর্ষণীয়তা এবং চরিত্রচিত্রণের দক্ষতা তার এ সৃষ্টিকে সমৃদ্ধ করেছে।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup