সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর কাঁদো নদী কাঁদো' (১৯৬৮) উপন্যাসটি চেতনাপ্রবাহরীতিতে রচিত।
উপন্যাসে মুস্তফা, তবারক, খােদেজা, সকিনা, ছলিম, কফিল উদ্দিন, মােসলেহ উদ্দিন, বদর শেখ, খেদমতুল্লা, কালু মিয়া ইত্যাদি চরিত্রের নামে গ্রামীণ ও কুমুরডাঙ্গার শাহরিক পরিবেশ বর্ণনা করা হয়েছে।
ঔপন্যাসিক চেতনাপ্রবাহ রীতি প্রয়ােগে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার স্বরূপ তুলে ধরেছেন। কিন্তু গ্রামের ছেলে মুস্তফা উচ্চশিক্ষা নিয়ে শহরে বিচারক পদে চাকরিকালে চাকরি ও পরিপার্শ্বের কারণে মানসিক দ্বন্দ্বে পতিত হয়। নিকটাত্মীয়া খােদেজা আত্মহত্যা করলে মুস্তফা ভাবে যে, মৃতের আত্মা তাকে অনুসরণ করছে। মুস্তফাও আত্মহত্যা করে।
অন্যদিকে বাকল নদীতে চর পড়ায় ঘাটের টিকিট মাস্টার খতিব, ডাক্তার বােরহান, বাদশা, সকিনা, মােসলেহ উদ্দিন সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ উপন্যাসে ধর্মের নামে আচার-সর্বস্বতা, বিজ্ঞানের নামে অদৃষ্টবাদিতা, বাস্তবতার নামে স্বপ্ন-কল্পনা ইত্যাদির বিরুদ্ধাচারণ দেখা যায়।
গ্রামীণ জীবন ও শহরের জীবনের পার্থক্য লক্ষ করা যায়। মানুষে মানুষে শ্রেণিবৈষম্য, বিরােধ, সংগ্রামসহ বহুবিচিত্র রূপ প্রত্যক্ষ করা যায়।
খেদমতুল্লা হত্যা ঘটনাটি স্মরণযােগ্য। এখানে নদী রূপী ভূমি একটি মানবিক চরিত্রের আকার ধারণ করে মানবীয় বৈশিষ্ট্যে মানুষের দুঃখেই কেঁদেছে।
উপন্যাসে ব্যক্তির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সুখ-দুঃখ নিয়ে সামষ্টিক অভিজ্ঞান রচিত হয়েছে। নদী হয়ে উঠেছে সামুহিক জীবনবাদী চেতনার প্রতীক। উপন্যাসে শুধু বিষয়চিন্তা নয় প্রকরণেও নতুনত্ব পরিদৃষ্ট হয়।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup