শামসুদ্দীন আবুল কালামের কাশবনের কন্যা’ (১৯৫৪) উপন্যাসে গ্রামকে এমনভাবে তুলে আনা হয়েছে যে, দুঃখ-দারিদ্র্য থাকলেও গ্রামই সুখের স্বর্গ, সমস্ত বিশ্বাসের আধার। কাশবনের কন্যা’ উপন্যাসটি এক পল্লী গায়ক ও কবির জীবনের সঙ্গে তার সঙ্গীদের জীবনগাথা।
সিকদার ও হােসেন পরস্পর বন্ধু। নদীর ধারে তাদের বাড়ি। নদী থেকে মাছ বিশেষত ইলিশ মাছ ধরে তাদের জীবন অতিবাহিত হয়। সিকদার আর হােসেনের জীবনে রয়েছে প্রকৃতি নির্ভরতা, রয়েছে প্রগাঢ় মানবিক অনুভূতি যার নাম প্রেম।
হােসেন সখিনাকে ভালােবাসে কিন্তু সখিনার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। অন্যদিকে সিকদারের ভালােবাসার পাত্রীর নাম জোবেদা। জোবেদারও বিয়ে হয়ে যায় সম্পদশালী গম্ভীর পুরুষ আসগরউল্লাহর সঙ্গে।
সিকদার জোবেদাকে পেয়ে কবিয়াল জীবনেই মুক্তির পথ খোঁজে অন্যদিকে হােসেন ভূমিহীন ছবদারের পরিবারের অসহায়ত্ব দেখে ছবদারের মেয়ে মেহেরজানের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। সিকদার ও হােসেনের জীবন ধারাকে অবলম্বন করে এ উপন্যাসের কাহিনি গতি পেয়েছে।
উপন্যাসে বরিশাল অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি, লােকজীবন, গ্রামীণ দিগন্ত ফটোগ্রাফিকভাবে চিত্রায়িত। সিকদার, হােসেন, জোবেদা, মেহেরজান প্রমুখের মুখের আঞ্চলিক কথা, লােকসঙ্গীত, প্রচলিত লােকবচন ইত্যাদির ব্যবহার উপন্যাসটিকে সুখপাঠ্য ও বিশ্বস্ত করেছে।
কাশবনের কন্যা’ গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, এ উপন্যাসে ঔপন্যাসিক রােমান্টিক মনােভঙ্গিতে এমন এক গ্রাম, গ্রামের মানুষ ও পরিবেশ তুলে এনেছেন, যা দুঃখ অতিক্রমকারী, সুখস্বপ্ন আশা সঞ্চারী।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup