রশীদ হায়দারের ‘খাঁচায়’ (১৯৭৬) উপন্যাস বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা। এ উপন্যাসে একাত্তরের অবরুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষের যন্ত্রণার কথা উচ্চারিত হয়েছে। ডিসেম্বরেই এ খাঁচায় আটকে পড়া মানুষের যন্ত্রণা-উৎকণ্ঠা তীব্র হয়েছিল ।
আমেরিকার সেভেনথ ফ্লীট বঙ্গোপসাগরের দিকে এগিয়ে আসছে শুনে জাফরের সমস্ত অনুভূতিগুলাে নিষ্ক্রিয় হয়ে রাস্তার মতাে হয়ে গেছে। যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা, খাঁচাটা আরাে সংকুচিত হয়ে আসছে, খাচার চারপাশে উদ্যত মরণাস্ত্র।
যুদ্ধ লােভকে তীব্র করেছে, ধ্বংসকে অনিবার্য করেছে, মানুষকে বিচ্ছিন্ন করেছে প্রিয়জন থেকে, মানবিক সমস্ত বােধকে উৎপাটিত করতে চেষ্টা করেছে যুদ্ধ। তবু কোনাে যুদ্ধই মানবতাকে ধ্বংস করতে পারে, পারেনি। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন ইশতিয়াকের কাছেও সে মানবতা দুর্নিরীক্ষ্য নয়।
রবীন্দ্রনাথের কাবুলীওয়ালা’ তার পিতৃহৃদয়ের বৈভব নিয়ে আরেকবার রশীদ হায়দারের সামনে এসেছিল। এই দৃষ্টির সচেতনতা, এই মানবিকতা অনুসন্ধানেই শিল্পীর মহৎ গুণ।
অন্যদিকে রশীদ হায়দার স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের একটি সম্ভাব্য চিত্র রচনা করেছেন কয়েকটি। আচড়ে। সেই সঙ্গে খাচার প্রতীকী ব্যঞ্জনা যথার্থ শিল্পরূপ লাভ করে। খাচা বাংলাদেশ, খাঁচায় বদ্ধ টিয়ে। বাংলাদেশের মানুষ। একটি টিয়ে পাখির মুক্তি দেশের স্বাধীনতার সংকেত বহন করে।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup