দিলারা হাশেমের প্রথম উপন্যাস ‘ঘর মন জানালা’ (১৯৬৫)। এ উপন্যাসে নগর জীবনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে। ঘর মন জানালা’ উপন্যাসের নায়িকা নাজমার জীবনের সংগ্রাম তার যন্ত্রণা ও মনের বিচিত্র প্রেমানুভূতির কথা বলা হয়েছে।
লেখিকা এদেশের মধ্যবিত্ত সমাজের সগ্রাম ও ব্যর্থতাবােধের যে কাহিনি বিধৃত করেছেন তা নাজমাকে কেন্দ্র করে রূপলাভ করেছে। অপরিসীম জীবনীশক্তি কর্মদক্ষতা ও ব্যক্তিত্বের গুণে সে প্রবেশিকা পাশের পর চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। সে মালেককে ভালােবাসত। ছােট বােন আসমার সরলতার সুযােগ নিয়ে এক লম্পট প্রেমের নামে তার সর্বনাশ ঘটায়। অবৈধ মাতৃত্বের দুঃসহ যন্ত্রণাকাতর আসমাকে উদ্ধারের জন্য নাজমা নিজের চরম ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়। সে নিজের প্রেমিক মালেককে অনুরােধ করে আসমাকে বিয়ে করার জন্য। ঘটনার আকস্মিকতায় অপ্রস্তুত মালেক আসমাকে বিয়ে করে ঘর ছেড়ে চলে যায়। কাহিনির শেষে মৃত্যুপথযাত্রী আসমার পাশে মালেক আসে। কিন্তু আসমার মৃত্যু ঘটে। মালেক জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। নাজমার প্রেম তার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকলেও তার কোনাে মর্যাদা থাকে নি। যে আসমার জন্য নিজের প্রেমকে বিসর্জন দিল সে আসমার মৃত্যুর ফলে তার ত্যাগ অর্থহীন হয়ে পড়ে। তবে আসমার মৃত্যুর সময় নাজমা ও মালেকের একসঙ্গে উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা যেতে পারে। এই উপন্যাসে রােমান্টিক কাহিনির পাশাপাশি বাংলাদেশের নাগরিক জীবনের যে কালস্বাক্ষর তিনি উপস্থাপন করেছেন, সমাজতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক উভয় অর্থেই তা মূল্যবান।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup