বাংলা উপন্যাসের সার্থক ও জনপ্রিয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অনবদ্য সৃষ্টি ‘দেবদাস’ (১৯১৭) ভারতবর্ষ' পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।
প্রেমের বিচিত্র রহস্য উদঘাটনে শরৎচন্দ্র যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। বাঙালি জীবনের সংকীর্ণতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেমের সাধারণ বৈশিষ্ট্য পরিস্ফুটন করা যে ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত, শরৎচন্দ্রের হাতে তা প্রকাশের অপূর্ব সুযােগ লাভ করে।
সামাজিক প্রতিবন্ধকতায় দেবদাস তার বাল্যপ্রণয়ী পার্বতীকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়। সেই ব্যর্থতায় নিজেকে তিলে তিলে ক্ষয় করার বেদনাময় কাহিনি। নারী হৃদয়ের বিবিধ বৈশিষ্ট্য পরম সার্থকতা সহকারে রূপায়িত হয়েছে। ভালােবাসার আকর্ষণ প্রবলতর, প্রত্যাখান দুর্বার উভয়ের প্রবল দ্বন্দ্ব প্রকাশ পেয়েছে পার্বতী চরিত্রে। আবার আগুনে পুড়ে খাটি সােনায় রূপায়িত হয়েছে চন্দ্রমুখী।
এই উপন্যাস সমস্ত ভারতবর্ষে জনপ্রিয় হয়। দেবদাস ও পার্বতী আধুনিক ভারতীয় জীবনে ব্যর্থ প্রেমিক-প্রেমিকার রূপকে পরিণত করেছে। দেবদাস, পার্বতী (পারু), চন্দ্রমুখী, চুনিলাল, ধর্মদাস উপন্যাসের উল্লেখযােগ্য চরিত্র।
শরৎচন্দ্র ছিলেন সিদ্ধহস্ত জীবনরসিক, তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলাে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বিরাজমান। মানুষের জন্য মানুষের ভালােবাসাকে প্রধান উপাদান হিসেবে রূপায়িত করে শরৎচন্দ্র তার উপন্যাসে সৃষ্ট চরিত্রগুলােকে গৃহ ও সমাজের মধ্যে স্থাপন করেছেন।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup